বাংলাদেশ

ঢামেক পরিচালক দাফনের সময়ে নবজাতকের জীবিত হওয়াকে ‘দুঃখজনক ও মিরাকল’ বললেন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর কবরস্থানে নেওয়ার পর নবজাতকের জীবিত হয়ে ওঠার ঘটনাটি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন।

‘ঘটনাটি মিরাকল’ মিরাকল মন্তব্য করে তদন্ত শেষে কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের ঢামেক পরিচালক বলেন, ‘আমি আজ সকালেও চার সদস্যের তদন্ত কমিটির সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের কাছেও জানার চেষ্টা করেছি কী কারণে এমনটি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিশুটি জন্মের পর কোনো কান্নাকাটি, নড়াচড়া ছিল না। তার হার্টবিটও পাচ্ছিল না। আমাদের চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করছিল, কিন্তু অনেক সময় পরেও কোনো রেসপন্স পাচ্ছিল না। তারপরও চিকিৎসকরা অক্সিজেন দিয়ে রেখে দেয় শিশুটিকে।’

নাসির উদ্দিন বলেন, পরে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে ডেড সার্টিফিকেট দেওয়ার হয়। এরপরই শিশুটির বাবা কবরস্থানে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, শিশুটি এখন এনআইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। আগের চাইতে কিছুটা ইম্প্রুভ হচ্ছে। এক কেজি ওজনের কমই শিশুটি জন্ম হয়েছিল। এ জন্য তার অনেক কিছুই ডেভেলপ হয়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে ঢামেক পরিচালক বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। সমস্যাটা কোথায় ছিল সেটি বের করার জন্যই তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আজকেও আমার সঙ্গে বসেছে। কেন এমন ঘটনা হলো তা বের করা হবে আর এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি মিরাকল। মেডিকেল সায়েন্সে এমন ঘটনা হতেই পারে, অনেক জায়গায়ই হয়েছে। তবে আমরা দেখবো কারও কোনো অবহেলা ছিল কিনা।’

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এর আগেও আমাদের এখানে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় ওই চিকিৎসককে আমরা আর এখানে ট্রেনিং দিইনি। একপর্যায়ে তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। তবে এটি ইচ্ছা করে কেউ করেনি।’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে ঢামেকের গাইনি বিভাগে শাহিনুর বেগম নামের এক গৃহবধূ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান বাচ্চাটির মৃত অবস্থায় জন্ম হয়েছে।

গৃহবধূর স্বামী ইয়াসিন বলেন, এরপর হাসপাতালের আয়া বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেন এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলেন।

রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে কবর খোঁড়া যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, তখন কান্নাকাটি শব্দ শুনতে পান তিনি।

আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে পাশে রাখা নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে, কান্নাকাটি করছে।

এরপরই তাকে দ্রুত আবার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং তাকে চিকিৎসকরা দেখে পরে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন বলে জানান তার বাবা। পরিবার শিশুটির নাম রেখেছে মরিয়ম।❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension