
সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম সম্পর্কে কটূক্তি করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের প্রভাষক সিরাজাম মনিরাকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
রোববার (১৪ জুন) দিবাগত রাত ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দারপাড়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আইসিটি আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম।
ওসি তদন্ত রবিউল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আইসিটি আইনে করা মামলায় শিক্ষক সিরাজাম মুনিরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৮, তারিখ ১৪/০৬/২০২০। তবে গ্রেফতার করে কোথায় রাখা হয়েছে এ বিষয়ে কোনও কিছু বলেন নি।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বলা যাচ্ছেনা তবে পুলিশ হেফাজতে আছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া যুগান্তরকে বলেন, আমার দায়ের করা মামলায় সিরাজাম মনিরা কে গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু গ্রেফতারের ৩০ মিনিট পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন এসে প্রশাসনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, এই প্রশাসনই তো সিরাজুম মনিরা কে নিয়োগ দিয়েছে, সুতরাং তারাও দায় এড়াতে পারে না।
সিরাজুম মুনিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ও ছাত্রজীবনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ছিলেন। জানা যায়, শনিবার (১৩ জুন) লাইফ সাপোর্টে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মারা যান।
তার মৃত্যু নিয়ে শিক্ষক সিরাজাম মুনিরা তা ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ব্যাঙ্গ করে স্ট্যাটাসে লিখেন ‘যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হল।’ স্ট্যাটাস দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তা ডিলিট করেন তিনি।
জানা গেছে পরে, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া থানায় ডিজিটাল আইনে একটি মামলা করলে সেই মামলায় শনিবার দিবাগত রাতেই সিরাজাম মনিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর তার দেয়া পোস্টের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ও আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্তের শাস্তি নিশ্চিতসহ চাকরিচ্যুতের দাবি জানান।
এদিকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ব্যাঙ্গাত্মক স্ট্যাটাস দেয়ায় সিরাজুম মনিরাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ⛘
একজন দলীয় লোক সবার কাছে ভালো হয় কিভাবে তা আমার বুঝে আসে না। আর কোনো লোকের সমালোচনাকে কটূক্তি বলে চালিয়ে দেওয়া একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে কতটা যুক্তিসংগত? যদি বলা হয় মৃত লোককে নিয়ে সমালোচনা করাটা ঠিক নয় তাহলে বলতে হয় সবাই সূফি সাধক। প্রতিদিন বঙ্গবন্ধুর, জিয়ার, তাহেরের, ভাসানীর, শেরে বাংলার, হোসেন শহীদের রাজনৈতিক কর্ম নিয়ে আলোচনা হয়, হয় সমালোচনা। তাহলেেতো প্রতিদিন মামলা হওয়া চাই। সমালোচনা যদি অপরাধ হয় ( হোক সে মৃত কিংবা জীবিত) তাহলে বলতে হয় ইয়াহিয়া ভালো মানুষ ছিলেন, গোলাম আজম(রাজাকার) ভালো মানুষ ছিলেন, সাকা চৌধুরী(যুদ্ধাপরাধী) ভালো মানুষ ছিলেন। যদি কেউ আপনার কিংবা আপনার আপনজনের বিরুদ্ধে কলম ধরে বিপরীতে আপনি যদি তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেন, যুযুর ভয় দেখান তাহলে সন্ত্রাস কে? মসির জবাব অসি দিয়ে হয় না। আর যারা মসিকে অসি দ্বারা স্তব্ধ করতে চাই তারা আবরণে গণতান্ত্রিক হলেও মননে-মগজে-চেতনায় স্বৈরতান্ত্রিক। ইহা যদি হয় রাজনীতির ভাষা তাহলে দেশে রাজনীতির ভবিষ্যত কোথায়???