আন্তর্জাতিকপ্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন অভিযানেই মৃত লাদেন-পুত্র, জানালেন ট্রাম্প

রূপসী বাংলা আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেনকে খতম করা হয়েছে, এই রিপোর্টে আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেইসময় এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। এবার সেকথা স্বীকার করে নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই হামজা বিন লাদেনকেই তার বাবার সম্ভাব্য উত্তরসূরী বলে মনে করা হত। শনিবার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের পুত্র হামজা বিন লাদেন আমেরিকার চালানো এক অভিযানে মারা গেছে।

গত মাসে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমে তার নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। দু’বছর আগে আমেরিকা তাকে বিশ্ব সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্ণিত করে। তার মাথার দামও ঘোষণা করা হয়েছিল। হামজার বয়স প্রায় ৩০বছরের আশেপাশে। তিনি আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের ওপর আক্রমণ চালানোর ডাক দিয়েছিলেন।

হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ”হামজা বিন লাদেন, আল কায়দার শীর্ষ পর্যায়ের সদস্য এবং ওসামা বিন লাদেনের পুত্র, আফগানিস্তান/পাকিস্তান এলাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চালানোর সন্ত্রাস বিরোধী এক অভিযানে নিহত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ”হামজা বিন লাদেনের মৃত্যু আল কায়দার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বপদে শূন্যতা তৈরি করবে এবং তার বাবার সঙ্গে হামজার প্রতীকী যোগাযোগের জায়গাটাও তার মৃত্যুতে ধাক্কা খাবে। শুধু তাই নয়, দলের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমও এর ফলে বাধা পাবে।”

এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার নিশ্চিত করেন সেই খবর। এক মার্কিন সংবাদমধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারে হামজার মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নেন তিনি। কিন্তু আমেরিকাই তাকে মেরেছে কিনা, সে ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি তখনও।

ওসামা বিন লাদেনের ২৩টি সন্তানের মধ্যে ১৫তম সন্তান ছিল হামজা। লাদেনের তৃতীয় স্ত্রী’র ছেলে ছিল সে। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের গোপন ডেরায় লাদেনকে খতম করার পর বেশ কিছু তথ্য, ভিডিও ফুটেজ ও বহু ছবি বাজেয়াপ্ত করেছিল মার্কিন সেনা। সেগুলি খতিয়ে দেখে মার্কিন তদন্তকারীদের মত ছিল, লাদেনের অত্যন্ত প্রিয় সন্তান ছিল হামজা। তাকে জেহাদের যুবরাজও বলা হত।

২০১৮-তে শেষবার হামজা বিন লাদেনের বার্তা প্রকাশ করেছিল আল-কায়েদা। সেখানে হামজাকে সৌদি আরবকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছিল।

১৯৮৯ সালে জন্ম হামজা বিন লাদেনের। ১৯৯৬ তে যখন ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে চলে যায় ও আমেরিকার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে, তকন সঙ্গে ছিল হামজাও। একাধিক ভিডিওতে লাদেনের সঙ্গে হামজাকে দেখা গিয়েছিল।

লাদেনের এই ছেলেকে বহুদিন ধরেই খুঁজেছে আমেরিকা৷ কখনও জানা যায় যে সে পাকিস্তানে রয়েছে, কখনওবা আফগানিস্তানে৷ কখনও আবার ইরাকে৷ তবে আমেরিকা হাল ছাড়েনি৷ গত বছর শোনা যায়, এই হামজা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ অট্টার মেয়েকে বিয়ে করে৷ আল কায়দা সংগঠনে হামজা কোনও বড়সড় পদেই ছিল বলে অনুমান করা হয়।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ১ মিলিয়ন ডলার আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে আমেরিকা।

মাত্র ২২ বছর বয়সেই সে তার বাবাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল যে সে জিহাদের পথই বেছে নিচ্ছে। এক প্রাক্তন এফবিআই কর্তা, যিনি ৯/১১ হামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তিনিই ওই চিঠি প্রকাশ্যে এনেছিলেন বছর দুয়েক আগে। আলি সউফান নামে ওই গোয়েন্দা ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর চিফ ছিলেন। তাঁর মতে, হামজা যখন ছোট ছিল তখন থেকেই স্থির হয়ে গিয়েছিল যে লাদেনের পরে আল-কায়েদা চালাবে সেইই।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension