
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিতে বর্ণগত বৈষম্য: এবিসি’র বিশ্লেষণ
জনসংখ্যার ভিত্তিতে এবিসি নিউজের ১৫ রাজ্যে ভ্যাকসিন প্রদান তথ্য বিশ্লেষণ
জাহান আরা দোলন: এবিসি নিউজের ১৫টি রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্য পরিসংখ্যান এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত জাতীয় জনসংখ্যার তথ্যানুযায়ী শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের তুলনামূলকভাবে কম হারে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যগুলো থেকে জমা দেওয়া জাতি ও বর্ণর ভিত্তিতে ৪৮.১% উপাত্ত থেকে তথ্য হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সিডিসি এখনও অনুসন্ধান করছে। মহামারীর শুরুর দিকেও একইভাবে প্রতিবেদনে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু তথ্যাবলি অনুপস্থিত ছিল।
এবিসি নিউজের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে ৩১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত আলাস্কা, কলোরাডো, ফ্লোরিডা, ইন্ডিয়ানা, লুইসিয়ানা, মিসিসিপি, মিসৌরি, নিউ জার্সি, ওহাইয়ো, পেনসিলভেনিয়া, টেনেসি, টেক্সাস, ভার্মন্ট, ভার্জিনিয়া এবং পশ্চিম ভার্জিনিয়া রাজ্যের তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেক রাজ্যই জাতি ও বর্ণর ভিত্তিতে তথ্যাবলি সংযুক্ত করে নি, এবং রাজ্য থেকে প্রকাশিত তথ্য প্রায় ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ণ বা অসংগতিপূর্ণ।
যদিও বেশ কয়েকটি রাজ্য বর্ণ অনুসারে ভ্যাকসিনেশন তথ্য সরবরাহ করেছে, কিন্তু কতজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে, সেই সংখ্যার পরিবর্তে কত ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে তার হিসাব দিয়ে উপসংহার টেনেছে।
পেনসিলভেনিয়ায় মোট জনসংখ্যার ১২% কৃষ্ণাঙ্গ, এবং ৮১.৬% শ্বেতাঙ্গ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ জন পরিসংখ্যানের ১.৮% থেকেও কম কৃষ্ণাঙ্গের ভ্যাকসিনেশন হয়েছে। অথচ শ্বেতাঙ্গদের প্রায় ৫৭% শতাংশেরই ভ্যাকসিনেশন হয়েছে। অবশিষ্ট অংশের আটত্রিশ শতাংশ ‘অজানা’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, ২.৮% ‘অন্যান্য’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ০.১৯% কে এশীয় হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
একইভাবে মিসিসিপিতে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৮% অধিবাসী কৃষ্ণাঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও, শুধুমাত্র ১৭% শতাংশের টিকা দেওয়া হয়েছে। অথচ ৬৮% শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীর ৫৯% শতাংশকেই টিকা দেওয়া হয়েছে।
টেনেসিতে রাজ্যের জনসংখ্যার ১৭% কৃষ্ণাঙ্গ অধিবাসী। এদের মধ্যে মাত্র ৫.৮% ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে মোট জনসংখ্যার ৭৮% শ্বেতাঙ্গর মধ্যে ৬৫% এর ভ্যাকসিন দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।
সিডিসি’র দেওয়া তথ্যানুযায়ী কৃষ্ণাঙ্গ, স্পােনিয় ও আদিবাসী আমেরিকানরা শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিনগুণ হারে ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে কোভিড আক্রান্ত হয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তির পরিসংখ্যানও শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিনগুণ বেশি।
টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুসারে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, পালমোনারি / কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং স্থূলত্বসহ একাধিক রোগের উপসর্গ রয়েছে যা তাদেরকে কোভিড-১৯ এর জন্য অধিক মাত্রায় ঝুঁকিবহুল করে তোলে।
স্বাস্থ্যসেবা সবচেয়ে মৌলিক একটি স্তর। আমাদের সেই স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির চারপাশে বিশাল বড় সামাজিক এবং কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ সংঘবদ্ধ হয়ে রয়েছে, যেগুলো মূলত বহু দশকের কাঠামোগত বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের ফলাফল।❐
এবিসি নিউজ