
লকডাউন উপেক্ষিত
প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। যা আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হচ্ছে। কিন্তু এই বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথম দিনেও সবজায়গায় উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। বিধিনিষেধ প্রতিপালনে চোখে পড়েনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী তৎপরতাও।
সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, চলাফেরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের ফলে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের সংখ্যা কিছুটা কম। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকানপাট খোলা থাকায় কর্মজীবীরা বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের কর্মস্থলে যাচ্ছেন। তাদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরলেও কিছু মানুষ তা মানছেন না। কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও তা নামানো থুতনির নিচে।
একই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। কারওয়ান বাজারের বেশিরভাগ বিক্রেতাই মাস্ক পরছেন না। অনেক ক্রেতা থুতনিতে মাস্ক লাগিয়ে রেখেছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই বললেই চলে। সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাঠে থাকার কথা থাকলেও চোখে পড়েনি তেমন কোনো তৎপরতা।
মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, “করোনা গরিব মানুষের হয় না। আগের বছর করোনায় এত মানুষ মারা গেছে। কিন্তু মাস্ক না পরেও আমাদের কিছু হয়নি। এবারও হবে না।”
বাস বন্ধ থাকলেও চলছে অন্যান্য সব যানবাহন। খরচ বাঁচাতে সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলোতে যাত্রীরা ভাগাভাগি করে চলাচল করছেন। ফলে সেখানে নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব মানার বালাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “সবকিছু খুলে রেখে বাস বন্ধ করে রাখছে। মানুষ কি হাওয়ায় উড়ে উড়ে অফিসে যাবে। বাজারগুলোতে গিয়ে দেখেন কেউই মাস্ক পরছেন না। সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানার কথা তো চিন্তাই করা যায় না। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি।”
রামপুরা থেকে মাইক্রোবাসে করে কারওয়ান বাজারে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মৃণাল। তিনি বলেন, “করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাস বন্ধ করা হলেও রাস্তায় যেসব গাড়ি চলছে সেগুলো কম যাত্রী পরিবহন করছে না। আগে যেভাবে চলতে এখনো সেভাবে চলছে। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যানবাহন পেতে বেশি দেরি হচ্ছে।”
এভাবে বিধিনিষেধ না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন অনেক সাধারণ মানুষ।❐