
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান শাহ্ ফাউন্ডেশন গাইবান্ধা জেলায় শীতবস্ত্র প্রদানের ধারাবাহিকতায় এবারে দলিত শিশুদেরকে শীত বস্ত্র প্রদান করেছে। এদিন প্রায় অর্ধ শতাধিক শিশুদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেয়া হয়।
নিউ ইয়র্ক থেকে শাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট শাহ্ জে. চৌধুরী জানান, গেল জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অধিকার বঞ্চিত শিশুদেরকে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গেল ২৮ জানুয়ারি গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন শ্রেণিভুক্ত দরিদ্র ও অনাথ শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের ধারা কর্মসূচি শুরু করে।
শাহ্ জে. চৌধুরী জানান, ধারাবাহিক এ কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে তারা গাইবান্ধা জেলার তিনটি অঞ্চলে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। গেল ১৩ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক আয়োজনের কর্মসূচির চতুর্থ দফা বাস্তবায়ন। এবারের পর্বে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কালির বাজারে দলিত শ্রেণি রবিদাস সম্প্রদায়ের শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়।
রবিদাস সম্প্রদায় একসময় রাজদরবারে পালকি বহনের কাজে নিযুক্ত ছিল। এ সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাংলাদেশের অবহেলিত, অনুন্নত, মূল স্রোত থেকে বঞ্চিত ও পিছিয়েপড়া জাতিগোষ্ঠী। যদিও রবিদাস সম্প্রদায় স্বতন্ত্র ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বিশ্বাস, সমাজ-ব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এক স্বয়ংসম্পূর্ন জাতিসত্ত্বা। ব্রিটিশ শাসনামলে কর্মসূত্রে রবিদাসরা এদেশে আসে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন্ স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। ধারণা করা হয়, এ দেশের সকল জেলা, উপজেলায় এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে রবিদাসদের অবস্থান রয়েছে।
এবারের আয়োজনে শাহ্ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন গাইবান্ধা সংস্কৃতি আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব কবি সরোজ দেব, বাচিক শিল্পী দেবাশীষ দাশ দেবু ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অবলম্বনের প্রধান প্রবীর চক্রবর্তী। সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়ের দায়িত্বটি পালন করেন পরিবেশ আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি ও রাজনীতিবিদ ওয়াজিউর রহমান র্যাফেল। এসময় রবিদাস সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শাহ্ জে চৌধুরী আলাপকালে জানান, গেল ২৮ জানুয়ারি প্রথমদিনের আয়োজনে তার একশ’ অনাথ মেয়ে শিশুকে সোয়েটার দেন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনে সাঁওতাল আদিবাসী ১৬০ জন অনাথ শিশুকে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেয়।❐