
শুকতারা
সে রাতটিও ছিল আমার যাপিত সব রাতের মতো
মধ্যরাতের মধ্যভাগে লেপ্টে ছিলাম, লুকিয়ে ক্ষত।
নিত্য ক্লেশের গরল শরাব কণ্ঠে খানিক ঢেলে নিলাম
অভ্যেস প্রভুর হুকুমেতে নির্ঘুম রথে চড়ে বসলাম!
এমন সময়, রাতপ্রহরী জোরপূর্বক সঙ্গী হলো
একটুবাদে রাতের রণ ভঙ্গ করে, যাত্রা তারই সাঙ্গ হলো!
শ্রান্ত চাঁদও মরিয়া তখন ঘুমপুরীতে শায়িত হতে-
সেও তখন চড়ে বসল উল্টোদিকের উলটোরথে!
সবশেষেতে পিছু হটে আপন ছায়ার লাগাম ধরি
হ্যাঁচকা টানে হাত ছাড়িয়ে ছায়াও যে চাঁদের সাথেই দিল পাড়ি!
হঠাৎ দেখি শুকতারা এক মুচকি হেসে হাঁটছে পিছু
বললাম তারে, বিষের পেয়ালা নিচ্ছ কেন, তোমার আবার চাই কি কিছু?
অবলীলায় হাত বাড়ালো, দুঃখ নেবে মুষ্টি ভরে
কত এলো, কত গেলো, মুখ ঘুরিয়ে এলাম সরে!
এরপর নীরবে যায় আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতিও নিয়মমাফিক!
শুকতারাটি পাশেই হাঁটে, আমার গতিও সরলরৈখিক!
পথ বদলাই মধ্যরাতে, ইচ্ছে করেই হারাই দিশা!
তবুও সে পাশেই থাকে দুঃখ নেবার মরণ নেশা!
হোঁচট খেতে আঁধার খুঁজি- হোঁচট খাওয়া হয় না যে আর!
বারণ টপকে শুকতারা রোজ স্নিগ্ধ আলো ছড়ায় দেদার।
উফফ, এমন অবিচলতা! ক্লান্ত আমি দুঃখদানের চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করি।
এক প্রত্যুষে বিবেক আমায় বলল ডেকে, ঢের হয়েছে, স্বেচ্ছাচারী!
সুখটুকু কেন নিজের রাখছি বেদনার বিষে পিষ্ট সে জন?
দুঃখ শুধুই সে জন নেবে ,সুখটুকুও পাচ্ছে যে জন!
টনক নড়ায় অসম্মানের বল্লম ধরে, শুকতারাকে তাড়িয়ে দিলাম!
অভিমানে শুকতারাটি মেঘে লুকায়, আবার আমি একলা হলাম!
সেদিন হতে আবারও সেই দুঃখগুলো একাই গুনি
তবু তো এই অধিক ভালো স্বার্থপরতায় লাগাম টানি!
১২.০৭.২০২০