প্রধান খবরবাংলাদেশ
সত্যিকারের ডিজিটাল করার পথে হাঁটছে সরকার: জয়
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ১১ বছর আগে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের অভিযান শুরু করি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশ এখন অনেক এগিয়ে গেছে। ডিজিটাল গভর্নেন্সে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মডেল। অফিসিয়াল রেকর্ড অনুযায়ী আইটি খাতে বাংলাদেশের রফতানি ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের প্রযুক্তি খাতের রফতানি গার্মেন্ট খাতকে অতিক্রম করবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব কথা বলেন জয়।
পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল ফোন প্রযুক্তিসহ (ফাইভজি) দেশের ডিজিটাল উন্নয়নের নানা দিক তুলে ধরতে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
মেলায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, অধিকাংশ আইটি সেবা ইন্টারনেটভিত্তিক ও ইন্টারনেটের মাধ্যমেই এ খাতে রফতানি হচ্ছে। তাই প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ রফতানি হচ্ছে, তা জানা সম্ভব নয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, এক সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’র সমালোচনা হলেও মানুষের কাছে প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দিয়ে সত্যিকারের ডিজিটাল করার পথে হাঁটছে সরকার। এক যুগ আগেও দেশে ইন্টারনেট সংযোগ দুষ্প্রাপ্য ছিল। কিন্তু প্রযুক্তির প্রসারে এখন রোবোটিক্স আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ নিতেও প্রস্তুত বাংলাদেশ। খুব শিগগিরই বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফাইভ জি সেবার নবযুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করলাম। ভাবতে শুরু করলাম কীভাবে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আমরা এই বিষয়টাকে চাপিয়ে দিতে পারতাম না। আমরা ঠিক করলাম, আমরা দেশেই মোবাইল উৎপাদন করে তা কম দামে মানুষের মাঝে দেব, যাতে বাংলাদেশের সব মানুষ মোবাইল ফোন কিনতে পারে। একসময় আমরা বছরে ৩০ মিলিয়ন মোবাইল ফোন আমদানি করতাম, সেখানে আজ ২০ মিলিয়ন মোবাইল ফোন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ফোর জি চালু করার জন্য আমাদের সে মানের স্মার্টফোন দরকার ছিল। তবে বিদেশ থেকে আনা স্মার্টফোনগুলো ছিল বেশ দামি। ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে গিয়ে স্মার্টফোন উৎপাদনের সব বাধা দূর করেছি। আজ শুধু বাংলাদেশিদের চাহিদা পূরণের জন্যই আমরা স্মার্টফোন উৎপাদন করছি না। আমরা দেশের বাইরেও স্মার্টফোন রফতানি করছি, এমনকি বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ আমেরিকাতেও।
জয় বলেন, ডেটা কানেকটিভিটির দিক থেকেও আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। ১১ বছর আগে আমাদের এখানে টুজি কানেকটিভিটি পাওয়াই যেত না, অধিকাংশ পেতাম ওয়ানজি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রাইভেট সেক্টরগুলোর সঙ্গে বসলাম। নানা ইনসেনটিভ দিয়ে থ্রিজি স্পেকট্রাম অকশন দিলাম। তারপর ৫ বছরে আমরা ফোর জিতে উন্নীত হলাম।
তিনি বলেন, দেশের সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়নের মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার ইউনিয়নে এখন ফাইবার অপটিক সংযোগ পৌঁছে গেছে। ইন্টারনেট সংযোগ ছিল জটিল একটি ইস্যু। এখন আমাদের লক্ষ্য, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার কানেকটিভিটি পৌঁছে দেয়া।
‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, প্রযুক্তির মহাসড়ক’ প্রতিপাদ্যে প্রথমবারের মতো হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৩ দিনের মেলায় বিশ্বের সর্বশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি অভিজ্ঞতা নেয়া যাবে পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টারনেটেরও।
উদ্বোধনী পর্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকার জন্য ১৪টি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেয়া হবে। তিনদিনে বিভিন্ন বিষয়ে ১৩টি আলোচনাসভা হবে, যেখানে সরকারের মন্ত্রী ও দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর উর রহমান, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন বক্তৃতা করেন।