আন্তর্জাতিকএশিয়া

হৃদরোগে মৃত্যুর পরও ফাঁসিতে ঝোলানো হলো নিথর দেহ!

আগেই ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। সেজন্য ফাঁসির দিনে লাইনে দাঁড় করানো হয়েছিল ইরানের জাহরা ইসমাইলিকে। কিন্তু চোখের সামনে অন্যদের ফাঁসি দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারেন নি তিনি। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু এরপরও তাকে ছাড় দেওয়া হয় নি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট ও দ্য সান।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কুখ্যাত রাজাই শাহর জেলে সেই নিথর দেহকেই ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। নারীর শাশুড়িকে সন্তুষ্ট করার জন্য এ অমানবিক কাজ করেছিলেন কারা কর্মকর্তারা।

জাহরা ইসমাইলির বিরুদ্ধে নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগ ছিল। তার স্বামী একজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু তিনি তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে সবসময় অত্যাচার করতেন। তাই ক্রোধের বশে জাহরা তার স্বামীকে হত্যা করেন। সেই অভিযোগেই জাহরার ফাঁসি হয়।

জাহরার আইনজীবী ওমিদ মোরাদির একটি টুইটারের বরাত দিয়ে ওই গণমাধ্যম বলছে, ফাঁসির আগে আরও ১৬ জন সাজাপ্রাপ্তের পেছনে লাইনে দাঁড় করানো হয়েছিল দুই সন্তানের মা জাহরাকে। চোখের সামনে একের পর একজনকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখে সেই মানসিক ধাক্কা সামলাতে পারেন নি জাহরা। লাইনে দাঁড়িয়েই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু এরপরও তাকে ছাড় দেওয়া হয় নি।

মোরাদির দাবি, ডেথ সার্টিফিকেটে জাহরার মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। অত্যাচারী স্বামীর হাত থেকে দুই মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়েই স্বামীকে হত্যা করতে বাধ্য হন জাহরা।

জাহরার আইনজীবীর অভিযোগ, জাহরার শাশুড়ি ছেলে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা করলে মৃত্যুর পরেও জাহরার দেহটি ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে গিয়ে দড়িতে বেঁধে ঝোলানো হয়। যাতে ফাঁসিতে ঝোলানোর পর তার শাশুড়ি লাথি মেরে জাহরার পায়ের নিচ থেকে চেয়ারটি সরিয়ে দিতে পারেন।

ইরানে শরিয়ত আইনেই নিহত হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যাতে অভিযুক্তকে সরাসরি শাস্তি দেওয়ার সুযোগ পান তারা। আর ইরানে একই দিনে ১৭ জনের ফাঁসির ঘটনাও খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ চীনের পর ইরানেই সবচেয়ে বেশি প্রাণদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। মাদক পাচার, মদ্যপান, সমকামিতা, বিয়ের আগেই যৌন সম্পর্কের মতো অভিযোগেও সেদেশে প্রাণদণ্ডের শাস্তি দেওয়ার নজির রয়েছে।❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension