আইসিসি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের দশকাহন
রূপসী বাংলা স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাইভোল্টেজ ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমারের চোট শাপে বর হয়ে দাঁড়ায় মহম্মদ শামির কাছে। বাংলা পেসারের সামনে খুলে যায় প্রথম একাদশের দরজা৷ প্রস্তুত ছিলেন মাঠে নেমে পড়ার জন্য। পড়ে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়াও ছিলেন শামি। যদিও প্রথম সুযোগেই এমন চমকপ্রদ পারফরম্যান্স করে দেখাবেন, এতটা ভাবা সম্ভব ছিল না তাঁর পক্ষে৷ টিম ম্যানেজমেন্ট ও ক্যাপ্টেনের আস্থার যথাযথ মর্যাদা রেখে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই শামি তুলে নেন হ্যাটট্রিকসহ চারটি উইকেট।
প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান হলেও যেকোনও পর্যায়ের ক্রিকেটেই হ্যাটট্রিক সবসময় কৃতিত্বের। পরপর তিন বলে প্রতিপক্ষের তিন জন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে এখনও পর্যন্ত হাতে গোনা ৯ জন বোলার হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন৷ যদিও বিশ্বকাপের আসরে হ্যাটট্রিকের নজির রয়েছে দশটি৷ লসিথ মালিঙ্গা একমাত্র ক্রিকেটার যিনি বিশ্বকাপে দু’বার হ্যাটট্রিক করেছেন। যার মধ্যে একবার তিনি পরপর চার বলে তুলে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের চারটি উইকেট৷ শামি হলেন দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার যিনি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করার বিরল নজির গড়েন। কাকতলীয়ভাবে শামির আগের একমাত্র ভারতীয় বোলার চেতন শর্মা হলেন বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের অধিকারী। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক এ পর্যন্ত আইসিসি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের নজিরগুলি৷
চেতন শর্মা: ১৯৮৭ বিশ্বকাপে নাগপুরে প্রথম হ্যাটট্রিকের ঘটনা ঘটে৷ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের শেষ লিগ ম্যাচে চেতন শর্মা পরপর তিন বলে ক্লিন বোল্ড করেন কেন রাদারফোর্ড, ইয়ান স্মিথ ও ইভান চ্যাটফিল্ডকে।
সাকলিন মুস্তাক: প্রথম হ্যাটট্রিকের ১২ বছর পর বিশ্বকাপের মঞ্চে আবার দেখা যায় হ্যাটট্রিক। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ওভালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অফস্পিনার সাকলিন মুস্তাক পর পর তিন বলে আউট করেন হেনরি ওলঙ্গা, অ্যাডাম হাকল ও পমি মবাঙ্গওয়াকে।
চামিন্ডা ভাস: ২০০৩ বিশ্বকাপে পিটারমারিৎজবার্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম তিন বলে চামিন্ডা ভাস আউট করেন হান্নান সরকার, মহম্মদ আশরাফুল ও এহসানুল হককে। কোনও ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচের প্রথম তিন বলে তিনটি উইকেট তুলে নেওয়ার নজির ভাস ছাড়া আর কোনও বোলারের নেই।
ব্রেট লি: ২০০৩ বিশ্বকাপে ডারবানে কেনিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক এর কৃতিত্ব অর্জন করেন অজি পেসার ব্রেট লি। তিনি পর পর তিন বলে কেনেডি ওতিয়েনো, বৃজল প্যাটেল ও ডেবিড ওবুয়াকে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন।
লসিথ মালিঙ্গা: ২০০৭ বিশ্বকাপে গায়ানায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পরপর চার বলে চারটি উইকেট তুলে নেন শ্রীলহ্কার তারকা পেসার লসিথ মালিঙ্গা। তিনি আউট করেন শন পোলক, অ্যান্ড্রু হল, জ্যাক কালিস ও মাখায়া এনতিনিকে।
কেমার রোচ: ২০১১ বিশ্বকাপে দিল্লিতে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলার কেমার রোচ। তিনি পর পর তিন বলে আউট করেন পিটার শিলার, বার্নার্ড লুটস ও বার্নাড ওয়েস্টডিককে৷
লসিথ মালিঙ্গা: ২০১১ বিশ্বকাপে কলম্বোয় কেনিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের নজির গড়েন লসিথ মালিঙ্গা। তিনি পর পর তিন বলে আউট করেন তন্ময় মিশ্র, পিটার ওঙ্গনদো ও শেম এনগোচকে।
স্টিভ ফিন: ২০১৫ বিশ্বকাপে মেলবোর্নে আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন স্টিভ ফিন। তিনি পর পর ৩ বলে আউট করেন ব্র্যাড হ্যাডিন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল জনসনকে।
জেপি ডুমিনি: সিডনিতে ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন ডুমিনি। তিনি তিন বলে ফিরিয়ে দেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, নুয়ান কুলশেখরা ও তারিন্দু কৌশলকে৷
মহম্মদ শামি: সাউদাম্পটনে ২০১৫ বিশ্বকাপের লিগ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে হ্যাটট্রিক করেন মহম্মদ শামি৷ তিনি পর পর তিন বলে আউট করেন মহম্মদ নবি, আফতাব আলম ও মজিব উর রহমানকে৷