করোনারোধে নাকের স্প্রে আসছে
পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী ও বায়োটেক প্রতিষ্ঠান রিজেনেরন জিন থেরাপির মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এক প্রকার নাকের স্প্রে তৈরি করতে যাচ্ছেন, যা কভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে মানুষকে দূরে রাখবে।
নতুন এই থেরাপির কাজ হবে নতুন এই ভাইরাসটিকে দুর্বল করে দেওয়া, যাতে নাক ও গলায় থাকাকালীনই ভাইরাসটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শুধু নিষ্ক্রিয় করেই স্প্রেটির কাজ শেষ হবে না, পাশাপাশি দেশে অ্যান্টিবডিও উৎপাদিত হবে বলে বিজ্ঞানীদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে এএফপি।
অধ্যাপক জেমস উইলসন এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের এই স্প্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এটি ব্যবহারে কারও শরীরে সক্ষম প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন হবে না। প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়াই স্প্রে কাজ করবে শরীরে।’ বর্তমানে এমনই একটি প্রযুক্তি প্রাণীদের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রাণীদের ওপর পরীক্ষা সফল হলে তা মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হবে। বলা হচ্ছে, এক ডোজ স্প্রেতে ছয় মাসের সুরক্ষা থাকবে।
জিন থেরাপির দুনিয়া উইলসন একজন অগ্রগামী গবেষক। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে জিনগত কোডের মাধ্যমে ভাইরাসকে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তার বিশদ কাজ রয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন গবেষক দলই আদেনো অ্যাসোসিয়েটেড ভাইরাস (এএভি) শনাক্ত করে প্রথম। এই ভাইরাস মানুষ ও পশু উভয়কেই আক্রান্ত করতে সক্ষম। জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ভাইরাসকে প্রতিহত করে উইলসনের দল।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই উইলসনের দল যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এই থেরাপি প্রয়োগের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু রিজেনেরন যতদিন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে দুটি অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে নি, ততদিন তাদের অনুমতি দেওয়া হয় নি। রিজেনেরনের অ্যান্টিবডি দুটির পরীক্ষা চলছে এখনও। খুব জটিল কোনও রোগী না হলে তার ওপর এই থেরাপি প্রয়োগ করা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শরীরে এই থেরাপিই দেওয়া হয়েছিল।
সাধারণত ইমিউন সেলগুলোই অ্যান্টিবডি তৈরি করে। আর এই পদ্ধতিকেই কাজে লাগাতে চাইছে উইলসনের দল। কভিড-১৯ ভাইরাসটি মানুষের নাক দিয়ে এখন ফুসফুসে প্রবেশ করছে। নাকের ওই স্প্রেও একই পথ দিয়ে ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিহত করবে এমনটাই বলা হচ্ছে। বাজারে প্রচলিত অন্য টিকাগুলোর তুলনায় এই স্প্রের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম হবে। আগামী বছর নাগাদ এই থেরাপি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা যাবে বলে ধারণা রিজেনেরনের।❐