ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় নারাজ শিব সেনা
রূপসী বাংলা কলকাতা ডেস্ক: ভোটের আগে সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল মহারাষ্ট্রে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফল সামনে আসতে দেখা গেল ছবিটা সম্পূর্ণ অন্য। শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে ১৬১টি আসন দখল করলেও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেশ কিছু আসন কমেছে বিজেপির।
অপরদিকে আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে নিজেদের গড়ে শিবসেনার ফলও প্রত্যাশিত হয়নি। ২০১৪ লোকসভা ভোটের আসন সংখ্যার নিরিখে এবারে আসন কমেছে তাঁদেরও। তবে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে মহারাষ্ট্রে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই যেন রক্তের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা। বিজেপির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিই চেয়ে বসেছেন তাঁরা।
সরকার গড়ার ক্ষেত্রে ৫০-৫০ বাঁটোয়ারার কথা বলেছেন শিবসেনা প্রধান। তবে, ভোটের ফল বেরনোর আগে পর্যন্ত নিশ্চিন্তে ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনে ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৪০টি আসন নিশ্চিত করেছিল বিজেপি। তাই এই অবস্থায় কোনওরকম দাবিদাওয়ার পথে যাননি শিবসেনা প্রধান উদ্ধব। মাঝে একবার মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য সুর চড়ালেও দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি।
উপমুখ্যমন্ত্রীর পদের ব্যাপারে তাঁকে আশ্বস্ত করেন অমিত। কিন্তু, বৃহস্পতিবারের বারবেলায় ভোটের গণনা যত এগিয়েছে প্রমাদ গুনেছে বিজেপি হাই কম্যান্ড। ২০০টি আসন তো দূর অস্ত, মহারাষ্ট্রে ১০৫টি আসন নিশ্চিত করতে পেরেছে পদ্ম শিবির। অন্যদিকে আসন সংখ্যা কমলেও ৫৬টি আসন নিশ্চিত করেছে শিবসেনা। মহারাষ্ট্রের বিধানসভার মসনদে বসতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। তাই শিবসেনার হাত ধরা ছাড়া সরকার গড়তে গেলে আর তেমন কোনও পথ খোলা নেই বিজেপির সামনে। আর এতদিন ধরে এই সুবর্ণ সুযোগটাই খুঁজছিলেন উদ্ভব। ভোটের ফল পরিস্কার হতেই সুর আরও চড়িয়েছেন তিনি।
ঠাকরে পরিবারে এই প্রথম ভোটে লড়ে মুম্বইয়ের ওরলি কেন্দ্র থেকে মোট ৬৭ হাজার ভোটে জিতেছেন উদ্ভব পুত্র আদিত্য ঠাকরে। আদিত্যকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর জন্য চেষ্টার কসুর করবেন না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উদ্ভব বলেন, “অমিত শাহ যখন আমার বাড়িতে এসেছিলেন, তখন জোটের প্রশ্নে পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ মেনে চলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যা বিজেপিকে মনে করিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।”
শিবসেনা সূত্রের খবর, শরীর খুব একটা ভাল নেই শিবসেনা প্রধান উদ্ভব ঠাকরের। তাই তাঁর পরে দলের হাল ধরতে স্ত্রী রেশমির ইচ্ছায় আদিত্যকে ভোটে নামিয়েছিলেন। ভোটে জেতার পর এত সহজে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় যাবে না শিবসেনা। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি না পেলেও বিজেপির থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক যেমন-স্বরাষ্ট্র বা অর্থ মন্ত্রক চেয়ে নিতে পারে তাঁরা। ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া শিবসেনা এখন বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করতে নারাজ। অন্যদিকে এই বিষয়ে ধীরে চল নীতিতে চলতে চাইছে বিজেপি। এই ব্যাপারে দীপাবলির পরেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।