আন্তর্জাতিকজাতিসংঘ

জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের প্রকৃত অবস্থার দিকে নজর দিচ্ছে না: নামারাত গোস্বামী

জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের প্রকৃত অবস্থার দিকে নজর দিচ্ছে না। রোহিঙ্গারা যে সমস্যার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্বের কাছে সঠিকভাবে তুল ধরতে ব্যর্থ হচ্ছে জাতিসংঘ।

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের নেওয়া দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় চলমান সংকট সমাধান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ‘জাতিগত দ্বন্দ্ব’ নিয়ে কাজ করা ভারতের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ নামারাত গোস্বামী।

তুরস্কের গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।

তার মতে, ‘জাতিসংঘের নেতৃত্বে যে কাজ চলছে তাতে হয়ত ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট সমাধান আসবে না।’

২০১৭ সালেও এই তুর্কি গণমাধ্যমটিকে তিনি এক প্রতিবেদনের সূত্র টেনে বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সংকটের প্রকট হওয়ার পেছনে জাতিসংঘের কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার প্রমাণ আছে।

বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরতে সহায়তা জাতিসংঘকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শুধু এই সংস্থাটিকেই একা দায়িত্ব নিলে হবে না, ইউরোপীয় ইউনিয়ন- ইইউ, দক্ষিণ এশিয়ার সংস্থাগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। আর এতেই বাংলাদেশের লক্ষ্যপূরণ হবে বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।

তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমারে সুষ্ঠু এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরির কোনও বিকল্প নেই। আর এর জন্য সু চি সরকারকেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরাতে আঞ্চলিক দেশ হিসেব ভারতকে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কথা জানান তিনি। নয়াদিল্লির উচিত জাতিসংঘের এই প্রক্রিয়াটিকে স্বাগত জানানো।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর বরাতে তিনি জানান, ভারতে কমপক্ষে ১৮ হাজার ৯১৪ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যা করেছে মিয়ানমার রাষ্ট্রীয় বাহিনী। আন্তারিও ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট চালানো নৃশংসতা থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানানো হয়।

১৮ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নারী ও শিশু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং পুলিশের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ১ লাখ ১৫ হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ঘরবাড়ি।

এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের সমস্যার দায়ভার এবং সংকট সমাধানে মিয়ানমারকেই নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।❐

আনাদোলু

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension