যুক্তরাষ্ট্র

জো বাইডেনের ৭০০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা উত্থাপন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট শিবিরের পদপ্রার্থী জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার ৭০০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন দেশবাসীর উদ্দেশে। এই অর্থ পরিকল্পনা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করা হচ্ছে। পেনসিলভানিয়ার নির্বাচনী প্রচারে দাঁড়িয়ে যখন এই কথাগুলো বলছিলেন জো বাইডেন তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রশাসনিক টানাপড়েন সামলাতে ব্যস্ত। ফলে আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় শিবিরের জনমতের চাপে পড়তে হবে জো বাইডেনকে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এবারের নির্বাচনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্লোগান ‘বিল্ড ব্যাক বেটার’। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারও ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগান নিয়েই আছেন। বাইডেনের স্লোগানই বলে দিচ্ছে, তিনি অর্থনীতিকে ভোটে জেতার হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। কারণ ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ বিগত অনেক বছরের তুলনায় এবারই প্রথম অর্থনৈতিক সংকট ছাড়াও স্বাস্থ্য খাত বিপর্যয় ও স্মরণাতীতকালের রেকর্ড বেকারত্বের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির এই শূন্যস্থানকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বাইডেন। আর ট্রাম্প এখনো চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ, ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে আমেরিকার স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যদিও বিশ্লেষক ও ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারীদের মতে, ট্রাম্প দেশি অর্থনীতিকে নয় শ্বেতাঙ্গ ধনিকদের খুশি রাখতেই আমেরিকা ফার্স্টের বুলি আওড়াচ্ছেন।

বাইডেনের অর্থ পরিকল্পনায় আছে প্রযুক্তি ও উৎপাদনমুখী খাতের প্রস্তাবনা। এই প্রস্তাবনার মধ্যে বিদেশি সাপ্লাই চেইনের প্রতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশেই উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার বিষয়টি স্থান পেয়েছে। তাই তো তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ভালো দিন ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা আমার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার উৎপাদনমুখী শিল্প ও বিশাল কর্মতৎপরতার দিকে তাকালেই বোঝা যায়, আমাদের বর্তমানের উন্নয়নের চাবিকাঠিও রয়েছে এই তৎপরতার মধ্যে।’

২০১৬ সালের নির্বাচনেও ট্রাম্প দেশি উৎপাদনমুখী শিল্পের বিকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। উল্টো ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধ, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দেশি শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। ট্রাম্পের আমলেই সয়াবিন শিল্পে ব্যাপক ধস নামে। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় স্বাস্থ্য খাতের বিপর্যয় ঠেকাতে ব্যর্থতার মধ্যেও নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন তিনি।

এদিকে নিউ ইয়র্কের কৌঁসুলিরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী খতিয়ে দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার দেওয়া এ আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত নিউ ইয়র্কের কৌঁসুলিদের প্রেসিডেন্টের আয়কর বিবরণী দেখার অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। প্রেসিডেন্ট হওয়ায় দায়মুক্তি পাবেন- এ অজুহাতে ট্রাম্পের আইনজীবীরা এতদিন কারও সঙ্গে তার আয়কর বিবরণী শেয়ার করেন নি। নিউ ইয়র্কের কৌঁসুলিরা ছাড়াও ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের দুটি কমিটি প্রেসিডেন্টের আয়কর বিবরণী দেখতে চেয়েছিল।

বৃহস্পতিবারের আদেশে আদালত ট্রাম্পের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য কংগ্রেস সদস্যদের দেওয়া যাবে না বলেও জানিয়েছে। আগের প্রেসিডেন্টদের মতো নিজের আয়কর বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ না করে চাপে থাকলেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও সরেননি ট্রাম্প। ❑

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension