মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২০যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প আগাম ভোটের চাপে

আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এবারের নির্বাচনকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন বলা হচ্ছে।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনকে ক্ষমতায় দেখা যাবে তা নিশ্চিতে উভয় দলই ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এই প্রচারণার মধ্যেই দেশটিতে ভোটারদের মধ্যে আগাম ভোট দেওয়ার হিড়িক পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকশন প্রজেক্টের বরাতে শনিবার বিবিসি জানিয়েছে, দেশটির রাজ্য পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার পর্যন্ত রেকর্ড ২ কোটি ২০ লাখ আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন। এই বিপুলসংখ্যক আগাম ভোট ট্রাম্পের জন্য ক্রমশ চাপের হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

২০১৬ সালে নির্বাচনের ঠিক এই সময়ে আগাম ভোট পড়েছিল প্রায় ৬০ লাখ। এ বছর আরও বেশি ভোটার ভোট দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে এবার আগাম ভোট বা ডাকযোগে ভোট বাড়বে, সেই আভাস অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

এবারের নির্বাচনে আগাম ভোট বেশি পড়ার অন্যতম কারণ করোনাভাইরাস ও ই-মেইলে ভোট দেওয়ার সুবিধা। ভোটাররা চাইলে করোনার সংক্রমণ এড়াতে ই-মেইলে ভোট দিতে পারবেন, এই সুবিধা দেওয়ার কারণেই আগাম ভোটের সংখ্যা বেশি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে আরেক দল বিশ্লেষক মনে করেন, নির্বাচনী সুবিধার চেয়েও, এবারের নির্বাচন যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে পেরেছেন ভোটাররা। যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ফোর্বস জানিয়েছে, এবার যে আগাম ভোট পড়েছে তা ২০১৬ সালে মোট ভোটের প্রায় ১৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারীর কারণে অনেকেই নির্বাচনের দিনের চেয়ে বিকল্প কোনো দিনে ভোট দেওয়ার কাজটি সেরে ফেলতে চাইছেন।

এ কারণেই এবার আগাম ভোট রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগাম ভোট শুরুর প্রথম দিন গত মঙ্গলবার রেকর্ড সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে। অথচ কে ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন এই বিচারে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশ কড়াকড়ি রয়েছে টেক্সাসে। কড়াকড়ির মধ্যেই যদি আগাম ভোটের অবস্থা এমন হয়, তাহলে আগামী কয়েক দিনে আরও অনেক ভোট পড়বে বলে মনে করছেন দেশটির নির্বাচনবিষয়ক বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষকরা।

গত সোমবার রেকর্ড সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৭৬টি আগাম ভোট পড়েছে জর্জিয়ায়। এদিকে এবারের নির্বাচনে বেশ গুরত্বপূর্ণ রাজ্য ওহাইওতে ২৩ লাখ ভোটার ডাকযোগে ভোট দেওয়ার জন্য রাজ্যটির নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের কাছে আগাম ব্যালটের জন্য আবেদন করেছেন; যা ২০১৬ সালের নির্বাচনের তুলনায় দ্বিগুণ।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান সমর্থকরা আগাম ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন। প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকানদের চেয়ে ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা দ্বিগুণ আগাম ভোট দিয়েছেন। আর ডেমোক্র্যাট আগাম ভোট দেওয়ায় সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানরা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে আগাম ভোট বেশী পাওয়া মানেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন, এমনটা ভাবার কারণ নেই। ডাকযোগে ভোটের বিরোধিতা করা রিপাবলিকানরা বলছেন, আগাম ভোটে হয়ত ডেমোক্র্যাটরা জয়ী হতে পারেন, কিন্তু নির্বাচনের দিনে বিপুল সংখ্যায় ভোট দেবেন রিপাবলিকান সমর্থকরা।

এবারের নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই ডাক ভোট নিয়ে একধরনের ধোঁয়াশা ও সন্দেহ তৈরি করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেছেন, ডাকযোগে ভোটের কারণে ব্যাপক আকারে কারচুপি হতে পারে। যদিও এ ধরনের অভিযোগের কোনো সত্যতা এখনো পাওয়া যায় নি। ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিসের সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ভোট কারচুপির হার ০.০০০০৪ থেকে ০.০০০৯ শতাংশ হতে পারে। বিবিসি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন আমেরিকানরা।❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension