বছর দশেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা একটা সংগঠন করেছিলেন। চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশন। গেল ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশী অধ্যুষিত প্যাটারশনের টাটোয়ার একটি হলে সে সংগঠনের ১০ বছর পূর্তি উৎসব হয়ে গেল। এ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের। এদিন সংগঠনের সভায় নব নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
আয়োজিত অনুষ্ঠানকে তিন পর্বে বিভক্ত করা হয়। প্রথম পর্বে আলোচনা সভা, দ্বিতীয় পর্বে কমিটি পরিচিতি এবং শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শফিকুল আনোয়ার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্যাটারশন সিটির মেয়র আঁদ্রে সাইজ। প্রধান বক্তা নিউজার্সির প্রসপ্রেক্ট পার্কি সিটির মেয়র মোহাম্মদ টি. খাইরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি কাউন্সিলম্যান শাহীন খান, সাবেক কাউন্সিলম্যান আক্তারুজ্জামান, কমিশনার নিয়াজ নাদিম, খবির আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আঁদ্রে সাইজ নতুন কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি যতদূর জানি চট্টগ্রামে যত মানুষের বসবাস সেই পরিমাণ মানুষ আমাদের নিউজার্সিতে নেই। নিউজার্সিতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং সিটির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা নিউজার্সিতে রাস্তার নামকরণ করেছি বাংলাদেশ ব্লুবার্ড। ১৬ ডিসেম্বর আমরা সিটি হলে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি। তিনি বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হবার পর ডেপুটি মেয়র বাংলাদেশী নিয়োগ করেছি। আমি সব সময় আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব।
প্রধান বক্তা প্রসপ্রেক্ট সিটির মেয়র মোহাম্মদ টি খায়রুল্লাহ নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশে গিয়েছি। বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি আপনাদের কারণেই মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। নিউজার্সিতে বসবাসরত বাংলাদেশীরা এই সিটির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদের গর্বিত করেছে। আমার অফিসের দরজা আপনাদের জন্য সব সময় খোলা থাকবে।
এম এ সালাম বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং মর্যাদাপূর্ণ অঞ্চল। চট্টগ্রামের সন্তান সূর্যসেন প্রথম ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সূর্যসেনকে স্মরণ করতেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও চট্টগ্রামের ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। অঞ্চল প্রেম না থাকলে দেশপ্রেম আসবে না, আবার দেশপ্রেম না থাকলে বিশ্বপ্রেম আসবে না।
সভায় অন্যান্য বক্তারা নিউজার্সিতে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ড তুলে ধরেন। তারা বলেন, নিউজার্সিতে আমরা যারা বসবাস করি এই ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে সহযোগিতা করে এবং মিলিত হবার সুযোগ সৃষ্টি করে। আমরা নিউজার্সিতে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ এবং সম্প্রীতির মধ্যে থাকতে চাই।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীরা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলো সোমা এবং তাকে সহযোগিতা করেন এনাম চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন রিয়ান এবং গীতা পাঠ করেন নিতেন দাস।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, নিউ জার্সি বিএনপির সভাপতি সৈয়দ জুবায়ের আলী, নিউ জার্সি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক চুন্নু, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রকি, সহ সভাপতি হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, সুধীর বিশ্বাস, ড. ইয়েমেন চৌধুরী, নিউ জার্সি মৌলবীবাজার এসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আনোয়ার চৌধুরী, সংগঠনের উপদেষ্টা মীর এইচ চৌধুরী, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব নিউ জার্সির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লোকমান চৌধুরী, উপদেষ্টা ফারুক আজম, সাবেক কাউন্সিলম্যান অ্যালেক্স স্যান্ডেজ, সাবেক কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী প্যারেক, কমিশনার খলিল আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমেদ, আলাউল খন্দকার, ইয়াহিয়া খান, আবুল কালাম, নূরুল ইসলাম, মোহাম্মদ দিদার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হারুণ অর রশীদ।
সংগঠনের নব নির্বাচিত কর্মকর্তারা হলেন- সভাপতি শফিকুল আনোয়ার চৌধুরী, সহ সভাপতি হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, সুধীর বিশ্বাস, রথীন্দ্র ধর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রকি, সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম, রাজেশ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান চৌধুরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শেখর দত্ত গুপ্ত, কোষাধ্যক্ষ অশীষ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক এনাম চৌধুরী, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শক্তি চৌধুরী, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল আলিম, অফিস সেক্রেটারি আবু চৌধুরী, সহ অফিস সেক্রেটারি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, আপ্যায়ন সম্পাদক আবু বকর, মহিলা সম্পাদিকা ফারহানা হোসেন, সহ মহিলা সম্পাদিকা শিপারা চৌধুরী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মেহের কান্তি ও আবু সালেহ নূরুল্লাহ, সদস্য সাধন দাস, দিদার চৌধুরী ও সাঈদ মোহাম্মদ আজাদ। এক্সজিকিউটিভ মেম্বার রাশেদ সরোয়ার, আবু আজাদ, আব্দুল মাবুদ, মোহাম্মদ শফিকুল হক চৌধুরী, আরিফ হোসাইন, প্রদীপ চৌধুরী, মিল্টন দাস, বিশ্বজিত নাথ, কাজী জালাল উদ্দিন, সামির আনোয়ার চৌধুরী, জামির উদ্দিন, আব্দুল আলিম, সজিব চৌধুরী, অক্তিম নাথ ও রাখাল নাথ।