প্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ-সংঘর্ষে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিস, কারফিউ

যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ খুন হওয়ার জেরে পুরো দেশজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পাশপাশি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রস্থল মিনিয়াপোলিস ও সেন্ট পলস শহরে স্থানীয় সময় শুক্র ও শনিবার রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত দু’দিন কারফিউ জারি করা হয়েছে।

সিএনএন অনলাইনের সংবাদে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার দিনভর যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি বড় শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে রাতে মিনিয়াপোলিসে কারফিউ ভেঙ্গে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে শত শত মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

মিনেসোটা ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে পুলিশের কোনো সদস্য এতে হতাহত হননি। কারফিউ অমান্য করায় মিনিয়াপোলিসে বহু বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার উপরে ফ্লয়েডকে ফেলে তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছেন এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। পরে শ্বাস বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

এই ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। টানা চারদিন ধরে এ বিক্ষোভ চলছে। তবে গত তিনদিনে মিনিয়াপোলিসে ব্যাপক সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার ডেরেক চাউভিন নামে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ফ্লয়েড হত্যায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদিন শত শত মানুষ হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হয়ে ফ্লয়েড হত্যার বিচার চান। এর কিছুক্ষণ পর হোয়াইট হাউস লকডাউন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েকদিনের ঘটনাকে ‘ভয়ানক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিহত ফ্লয়েডের পরিবারের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তবে ফ্লয়েডের পরিবারের সদস্যদের ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট।

এর আগে বিক্ষোভকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ উল্লেখ করে ট্রাম্প টুইটারে লিখেছিলেন, ‘লুট শুরু হলে, গুলিও শুরু হবে’। পরে প্রেসিডেন্টের এই পোস্টটিকে সহিংসতায় ‘উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগে ব্লক করে দেয় টুইটার।

নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলস, শিকাগো, ডেনভার, হস্টন, লুইসভিলা, ফনিক্স, কলম্বাস, মেমফিসসহ বিভিন্ন শহরে শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। আটলান্টায় সিএনএনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছিলেন।

এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি ভবনে ভাংচুর চালায়। ডালাসে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা চাউভিনের বিরুদ্ধে তৃতীয় স্তরের হত্যা এবং দ্বিতীয় স্তরের নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ফ্লয়েডের পরিবারের সদস্যরা ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথম স্তরের হত্যার অভিযোগ আনার দাবি জানিয়েছেন।

পাশাপাশি ফ্লয়েড হত্যায় জড়িত অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদেরও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তারা। একই দাবিতে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ⛘

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension