বৃষ্টিস্নাত মহাষ্টমী, ঢাকার কোথাও কুমারীপূজা হয় নি
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই শেষ হলো হিন্দুধর্মের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর পূজা। করোনা পরিস্থিতির কারণে রাজধানীর মণ্ডপগুলোতে তেমন কোনও লোক সমাগম হয় নি।
রবিবার মহানবমী। এদিন ভোর ৫টা ১৭ মিনিট থেকে সকাল ৭টার মধ্যে দুর্গা দেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা প্রশস্ত। অনেকের বিশ্বাস, মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার ক্ষণ। এই দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেওয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এই দিনই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব।
নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। এসব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন নবমীর দিন আধ্যাত্মিকতার চেয়েও অনেক বেশি লোকায়ত ভাবনায় ভাবিত থাকে মন।
শনিবার অষ্টমীর সকালে দেবীর মহাষ্টমী কল্পারম্ভ ও মহাষ্টমীবিহিত পূজা দিয়ে দিন শুরু হয়।
সরেজমিনে গুলশান-বনানী মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি ও করোনা মিলিয়ে এবার পূজা অর্চনাকারীদের জন্য পরিবেশটা বেশ প্রতিকূল। তারপরও থেমে নেই মা দুর্গার ভক্তরা। অন্যান্যবারের মতো উৎসবে ভাটা দেখা গেলেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অঞ্জলি দিতে পূজামণ্ডপে এসেছেন অনেক ভক্ত। তবে এ সময় ভক্তদের ভিড় করতে দেখা যায়নি। ভিড় না করতে পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকেও নজরদারি রাখা হয়েছে। মহাষ্টমী পূজার মূল আকর্ষণ কুমারীপূজা হলেও এবার করোনার কারণে সেই কুমারীপূজা হয়নি। প্রতি বছর ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনসহ কয়েকটি স্থানে কুমারীপূজা হতো।
অষ্টমীতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার কোথাও কুমারীপূজা হয় নি। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজশাহীতে জাঁকজমকভাবে পালিত হলো কুমারীপূজা। মহাষ্টমীর পূজা শেষ হতেই শুরু হয় কুমারীপূজার লগ্ন। রাজশাহীতে কুমারীপূজার আয়োজন করে ত্রিনয়নী সংঘ। শুধু এখানেই কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়। এবার দেবীরূপে মণ্ডপে এসে বসেন ১২ বছর বয়সী ঐন্দ্রিলা।
মহাষ্টমীতে নড়াইল শহরের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই অষ্টমীতে অসুর নিধনের জন্য কিশোরীকে কুমারী সাজিয়ে পূজা করা হয়। অসুর বধের জন্য এই দিনে দেবী দুর্গা কুমারী রূপ ধারণ করে অসুররূপী শত্রু নিধনে মত্ত হন।
মৌলভীবাজারের রঘুনাথপুর উপজেলার শ্রীশ্রী আনন্দময়ী কালীবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় অষ্টমীর কুমারীপূজা। তবে এবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কুমারীপূজায় ছিল না লোক সমাগম। সব আনুষ্ঠনিকতা ছিল সীমিত।❐