করোনাপ্রধান খবরভারত
ভারতে করোনাভাইরাস: কেরালা ও মহারাষ্ট্রে শতাধিক ভারতীয় পর্যবেক্ষণে
ভারতের কেরালা ও মহারাষ্ট্রে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহে শতাধিক ভারতীয়কে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে।
ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেছেন, এখনও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার নিশ্চিত কোনও ঘটনা শনাক্ত হয় নি। সাত যাত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পুনার একটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে চার যাত্রীর নমুনা পরীক্ষা করে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায় নি।
কেরালার জ্যেষ্ঠ এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, আজ রাজ্যে নতুন ৯৯ যাত্রী এসেছেন। সব মিলে মোট ১৭৯ যাত্রী নজরদারিতে আছে। মাত্র সাত জনের শরীরেই কোনও লক্ষণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, তাদের রক্ত ও শ্বাস-প্রশ্বাসযন্ত্রের নমুনা পরীক্ষার জন্য পুনার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে।
এদের মধ্যে ত্রিশুর, তিরুবন্তপুরম, পাঠানমথিত্ত ও মালাপ্পুরমের একজন করে এবং এর্নাকুলামের তিনজন করে রয়েছেন। তাদের সবাইকে রাজ্যের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি তিন জনের মধ্যে দুজনকে পরীক্ষা করে কোনও জীবানু পাওয়া যায় নি। সতর্কতার জন্য তাদের এখনও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর তৃতীয় ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।
এদিকে বিশ্বব্যাপী নতুন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর এতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৫৬ জন। রোববার প্রকাশিত নতুন তথ্য থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চান্দ্র নববর্ষের সরকারি ছুটিতে বিশেষ এক বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করলেন। বিবিসি ও রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এ সময় চীন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
গত বছরের শেষ দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। যেখানে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বিক্রি হতে দেখা গেছে।
উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
এই প্রাদুর্ভাবকে বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা আখ্যা দেওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মহামারী নিয়ন্ত্রণে চীন কতটা সক্ষম হবে তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দ্বিধায় রয়েছেন।
রোববার চীন জানায়, ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই করোনাভাইরাসে এক হাজার ৯৭৫ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছেন। এই রোগ বিস্তার কেন্দ্র করে চীন ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
এক কোটি ১০ লাখ লোকের শহর উহান মূলত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব জরুরি যানবাহন ছাড়া কোনও যাতায়াতও করতে দেওয়া হচ্ছে না শহরটিতে।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উহানে মার্কিন কনস্যুলেট থেকে তাদের কর্মীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। ২৮ জানুয়ারি সান ফ্রান্সিসকোগামী ফ্লাইটে মার্কিন বেসরকারি নাগরিকদের সীমিত সংখ্যক আসনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বেইজিংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লোকজনকে হাত না মেলানোর আহ্বান জানিয়েছে, তার বদলে হাত দিয়ে অভিবাদন জানানোর ঐতিহ্যবাহী ভঙ্গি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে।
রোববার সকালে শহরের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী বাসিন্দাদের কাছে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার কানাডা উহান থেকে ফেরা এক নাগরিকের শরীরে ভাইরাসটি পাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কর্মকর্তারা বলেন, পঞ্চাশোর্ধ ওই ব্যক্তি ২২ জানুয়ারি টরন্টোতে ফেরার একদিন পর শ্বাসযন্ত্রের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
নতুন চান্দ্রবর্ষ উদযাপন সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার থেকে চীন ১০টি শহরে গণপরিবহন ও সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর মন্দির বন্ধ করে দিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য নিষিদ্ধ শহর ও মহাপ্রাচীরের একটি অংশও বন্ধ রাখা হয়েছে।