ভারত

মমতা ও শুভেন্দু দুজনেরই দাবি নন্দীগ্রামে জিতেছেন

পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামে নিজের কেন্দ্রের একটি বুথ বিজেপি দখল করে সিল মারছে বলে অভিযোগ করে মমতা বলেছেন, ‘৮০ শতাংশ বুথ দখল হয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে কোর্টে যাব আমরা।’

ভোট গ্রহণ শেষে মমতা দাবি করেন, ‘৯০ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতব নন্দীগ্রামে।’

অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘যতটা মার্জিনে জিতব ভেবেছিলাম, তার চেয়ে বেশি মার্জিনে জিতবে বিজেপি।’

নন্দীগ্রামে হুইল চেয়ারে বসে যখন মমতা উত্তেজিত হয়ে একের পর এক ফোন করছেন, ঠিক তখনই পাশের জেলা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সভায় মোদি টেনে নিয়ে এলেন নীলবাড়ির লড়াইয়ের ‘হট সিট’ নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ। বলেন, ‘বাংলা যা চাইছে সেটাই হয়েছে নন্দীগ্রামে। দিদি, প্রথমে ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। পরে বুঝলেন সেটা ভুল করেছি।’ নন্দীগ্রামের ছবি ও তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘দিদিকে দেখুন। তা হলেই সব বুঝে যাবেন। দিদিই ওপিনিয়ন পোল, দিদিই এক্সিট পোল। তার চোখ-মুখ, হাব-ভাবেই সব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।’ মোদি এদিন ফের দাবি করেন, বাংলায় যে ‘আসল পরিবর্তন’-এর জোর হাওয়া বইছে তা প্রথম দফাতেই বোঝা গিয়েছে। বিজেপি ২০০-র বেশি আসনে জিতবে বলেও দাবি করেন তিনি।

উলুবেড়িয়ায় মমতার অন্য কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে জল্পনা উসকে দিয়ে মোদি বলেন, ‘দিদি অন্য কেন্দ্র থেকে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তা কি সত্যি? আপনি প্রথমে ওখানে (নন্দীগ্রাম) গেলেন, সেখানকার মানুষ আপনাকে জবাব দিয়েছে। আপনি যদি অন্য কেন্দ্র থেকে লড়তে চান, তা হলেও বাংলা প্রস্তুত।’ তবে রাতে তৃণমূল জানিয়ে দেয়, মমতার অন্য কোনো কেন্দ্র থেকে লড়াই করার কোনো প্রশ্নই নেই। কারণ, নন্দীগ্রাম থেকেই তিনি জিতছেন।

পরিস্থিতি তদারকি করতে ভারতীয় সময় দুপুর সোয়া ১টা নাগাদ রেয়াপাড়ার অস্থায়ী বাড়ি থেকে বয়াল মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ নম্বর বুথের উদ্দেশে রওনা দেন মমতা। বয়ালে পৌঁছে হুইল চেয়ারে চেপেই গ্রামের ভেতরে ঢোকেন তিনি। রাস্তায় তাকে ছেঁকে ধরেন তৃণমূল সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

বুধবার কেশবপুরে রাতে এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। রাত ১১টা নাগাদ কেশবপুর ব্লকের ৪ নম্বর অঞ্চলের অন্তর্গত দাদপুর গ্রামের হরিহর চক বুথ এলাকায় তৃণমূল কর্মী উত্তম দলুইকে ছুরি মেরে খুন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে কেশবপুরে পৃথকভাবে হামলা হয়েছে বিজেপি প্রার্থী প্রীতিশরঞ্জন কুয়ার এবং তার নির্বাচনী এজেন্ট তন্ময় ঘোষের ওপর। তাদের গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছে সংবাদমাধ্যমও। সেখানে হামলার অভিযোগে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। কেশবপুরের তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহার নির্বাচনী এজেন্ট হাবিবুর রহমানকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নন্দীগ্রামের ভোটগ্রহণ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করে গেছে তৃণমূল। অভিযোগ জানিয়েছেন, প্রার্থী মমতাও। অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, তার কোনো অভিযোগ নেই। শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোট হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। শুভেন্দু যেমন জয়ের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিন্ত বলে দাবি করেছেন তেমন মমতাও দু’আঙুলে ‘ভিকটরি’ দেখিয়ে বলেন, ‘নন্দীগ্রামে তৃণমূল ৯০ শতাংশ ভোট পাবে। মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদে আমিই জিতব।’❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension