মহামারী, লকডাউন – আবারও!
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় মহামারীর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রথমবার লকডাউন দেওয়ার পর অর্থনৈতিক কারণে শিথিল করতে বাধ্য হয়েছিল দেশগুলোর সরকার।
এবারে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত মার্চে শুরু করা লকডাউন থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করতেই পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাচ্ছে সংক্রমণের হার। গেল এক সপ্তাহে ভারত মোটামুটিভাবে ১০ হাজার মানুষের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর জানিয়েছে।
করোনা শনাক্ত রোগীদের সংখ্যায় গত মঙ্গলবারই চীনের উহান শহরকে ছাড়িয়ে গেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাই শহর।
প্রায় ১ লাখ শনাক্ত রোগী নিয়ে মহারাষ্ট্র এখন চীনের মোট ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির অর্থনীতি সচল করতে গেল ৯ মে লকডাউনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বাংলাদেশও গতকাল ১৩ জুন মোট করোনা সংক্রমণে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে।
জুনের শুরু থেকে পাকিস্তানে সংক্রমণ রেকর্ডসংখ্যক হারে বেড়েছে। করোনা পরীক্ষা বাড়ার কারণেও আগের তুলনায় বেড়েছে শনাক্তের হার।
প্রতিদিন ২৩ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষায় গত ১০ দিনে ৫ জনের মধ্যে একের বেশী মানুষের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। পাকিস্তানের সরকারি হিসাবে লকডাউন তোলার আগে ভাইরাস পরীক্ষায় আনুমানিক ১০ জনে ১ জনের পজিটিভ পাওয়া যেত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ সপ্তাহে পাকিস্তানকে সুনির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে আবারও লকডাউন জারির পরামর্শ দিয়েছে।
মহামারীর প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুর ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সফল হয়ে বিশ্বের মনোযোগ কাড়লেও সম্প্রতি কয়েক মাসে আবার দেশ দুটিতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। ভাইরাসটি কত সহজে ফিরে আসতে পারে এ থেকেই তা বোঝা যায়।
মে মাসের প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের ইতেওন এলাকার নাইট ক্লাব এবং বারগুলোতে যাওয়া এক যুবকের কাছ থেকে ভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে দ্রুতই সরকারকে আবার বেশ কিছু নাইট ক্লাব এবং বার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে স্কুল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনাও পিছিয়ে দিতে হয়। সিউলে বেশ কয়েক দফায় গুচ্ছ সংক্রমণ ধরা পড়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন দৈনিক সংক্রমণ ঘটছে ১০ জনেরও বেশি মানুষের।
‘ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’-এর বিশ্লেষকদের মতে, পোল্যান্ড এবং সুইডেন বাদে ইউরোপের সবখানেই সদ্য করোনাভাইরাস মহামারী প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। কিন্তু সেখানেও করোনাভাইরাস মহামারী দ্বিতীয় ধাপে প্রকট হয়ে উঠতে পারে এবং লকডাউনের প্রয়োজন আবারও পড়তে পারে বলে শঙ্কা আছে। ইউরোপে যুক্তরাজ্য করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে। ⛘