‘মোদি শুধু হিন্দুত্ব বোঝেন, ভারত বোঝেন না’
রূপসী বাংলা কলকাতা ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আবারও সোচ্চার হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীবিদ অমর্ত্য সেন। এবার তিনি মোদির জ্ঞানের পরিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অমর্ত্য সেনের দাবি, ভারতকে বোঝার মতো জ্ঞান নরেন্দ্র মোদির নেই, তিনি কেবল হিন্দুত্ববাদ বোঝেন।
সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন এই ভারতীয় নাগরিক।
দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অমর্ত্য সেন বলেন, ভারতে গণতন্ত্রের অবস্থা ভাল নয়। গোটা দেশ ভয়ে আছে। সংবাদমাধ্যমও স্বাধীন নয়, যা আগামীর জন্য মোটেই সুখবর নয়। তবে, তিনি আশাবাদী যে ভারত এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু, আলোচনাকেই ভয় পাচ্ছে সরকার। ভোট যে পদ্ধতিতেই নেওয়া হোক, আলোচনাকে ভয়ের বস্তু ভাবলে, গণতন্ত্র অর্জন করা সম্ভব নয়।’
এরপরই তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভারতে এখন কট্টর হিন্দুত্ববাদের দাপট চলছে। মোদি বহু ধর্ম ও জাতির দেশ ভারতকে ঠিক করে বোঝেনই না।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করতে গিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘গোধরা মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করাই মোদির সবচেয়ে বড় সাফল্য। কয়েক হাজারের বেশি মানুষের খুনের ঘটনায় যে তিনি যে যুক্ত ছিলেন, আজকাল অনেকে সেটাই বিশ্বাস করেন না।’
ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিরোধীদের কণ্ঠরোধ প্রসঙ্গেও এদিন সরব হন অমর্ত্য সেন। তবে শীঘ্রই এই পরিস্থিতি বদলাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
তার মতে, ‘এখনই সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনও কিছু সাহসী সংবাদপত্র ঝুঁকি নিয়ে খবর করছে। কিছু টিভি চ্যানেল সরকারের সমালোচনা করছে। প্রকাশ্যে বিরোধীরা এখনও সভা করতে পারছে। তাছাড়া ভারত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। সব রাজ্যে বিজেপি শক্তিশালী নয়। এটাই আশার কথা।’
এর আগে কাশ্মীর ইস্যুতে মোদির সমালোচনা করে ৮৫ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, ‘গোটা বিশ্বে গণতান্ত্রিক আদর্শ অর্জনের জন্য এত কিছু করেছে ভারত। তবে এখন আর আমি একজন ভারতীয় হিসাবে এই সত্য নিয়ে গর্বিত নই যে ভারতই গণতন্ত্রের পক্ষে প্রথম প্রাচ্যের দেশ ছিল। কেননা যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতে আমরা সেই খ্যাতি হারিয়ে ফেলেছি।’
গত ৫ আগস্ট মোদি সরকার জম্মু-কাম্মীরের উপর থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নিয়ে সেখানে কারফিউ জারি করার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কথা বলেছিলেন অমর্ত্য সেন।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন