
অভিবাসন ইস্যুতে জার্মানির ওপর ক্ষুব্ধ ইতালি
ভূমধ্যসাগরে বিপদে পড়া অভিবাসীদের সহায়তা করা সংস্থাগুলোকে জার্মানির অর্থায়ন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ইতালি। বার্লিনের এমন পদক্ষেপ রোমের জন্য ‘ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
লিবিয়া, তিউনিশিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় ইতালি। এ ক্ষেত্রে অভিবাসীদের সহায়তা করা সংস্থাগুলোকে বাধা বলে মনে করে আসছে ক্ষমতাসীন ডানপন্থী সরকার।
তাদের অর্থায়নে করা একটি প্রকল্প নিয়ে বার্লিনের ওপরও নাখোশ রোম। এর মাধ্যমে জার্মানি ইতালির জন্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইডো ক্রোসেট্টো। ইতালির মাটিতে অভিবাসীদের দেখভালের জন্য অর্থায়নকে রোম অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ হিসেবেও বিবেচনা করছে।
দেশটির দৈনিক লা স্টাম্পাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গুইডো বলেন, মানবপাচারকারীদের ঠেকাতে তার সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি এর সঙ্গে জড়িতদের ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন।
ইতালীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বার্লিন এটি না বোঝার ভান করছে। তারা একটি দেশের জন্য এমন সমস্যা তৈরি করছে যে আসলে তাদের বন্ধু হওয়া উচিত।’
তবে জার্মানি এ বিষয়ে আগেই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, সমুদ্র থেকে মানুষকে উদ্ধার করাকে ‘আইনি, মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব’ বলে মনে করে বার্লিন।
অভিবাসীদের সহায়তার বিষয়ে শুক্রবার জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন এ বিষয়ক প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত দেশটির পার্লামেন্টের। এ প্রকল্পের প্রথম কিস্তিতে চার লাখ থেকে আট লাখ ইউরো ছাড় দেওয়া হবে। ভূমিতে অভিবাসীদের দেখভাল করা এবং সমুদ্র থেকে তাদের উদ্ধারে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
যে সংগঠনগুলো এই টাকা পেতে যাচ্ছে তার একটি ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের সহায়তাকারী সংস্থা এসওএস হিউম্যানিটি।
শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা জার্মান সরকারের কাছ থেকে সাত লাখ ৯০ হাজার ইউরোপ পেতে যাচ্ছে।
ইতালির সরকারের হিসাবে নৌকায় করে চলতি বছর এখন পর্যন্ত এক লাখ ৩২ হাজার জন ইতালি পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬৯ হাজার।
অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকা ইতালির সরকার চলতি সপ্তাহে জানিয়েছে, অভিবাসীদের প্রত্যাবর্তনের জন্য তারা আটক কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্দি রাখার সময়সীমা বাড়াবে। সুরক্ষা প্রাপ্তির আবেদনের প্রক্রিয়া চলাকালে অর্থের বিনিময়ে অভিবাসীরা বন্দিদশা এড়াতে পারবে—এমন একটি নিয়মও আরোপ করা হয়েছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো যা নিয়ে কড়া সমালোচনা করছে।