‘আর কত মায়ের কোল খালি হবে?’ মোদীকে প্রশ্ন সন্তানহারা মায়ের
রূপসী বাংলা কলকাতা ডেস্ক:‘আর কত মায়ের কোল খালি হবে? আর কত?’ কথাটা বলতে বলতে চোখের কোনে জল চলে এল শহিদ জওয়ানের মায়ের। ঠিক এক মাস আগে জঙ্গি হামলা কোল খালি করেছিল শকুন্তলা দেবীর। আজ খবরে পাতায় পাতায় শুধুই পুলওয়ামায় শহিদদের আত্নার শান্তির প্রার্থনা। জয়ধ্বনি। কিন্তু এসব কানে লাগে না বৃদ্ধা মায়ের। ছেলেটা যে আর ঘরে আসবে না। কোনোদিন আসবে না।
সেদিন মঙ্গলবার ছিল। জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার লাগোয়া ভারত-পাক সীমান্তে সতন্ত্র পাহারায় ছিলেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা। জম্মু–কাশ্মীরের সাম্বা সেক্টরে বলেও এই অঞ্চল পরিচিত। রাত তখন ১০.৫০। সেদিনকেই আবার ভারতীয় সেনা দিবস। এমন রাতেই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাক স্নাইপার বাহিনী। স্নাইপারের বুলেট আসে লাগে কর্তব্যরত বিএসএফ কমান্ডান্ট বিনয় প্রসাদের পেটে। ঠিক ডান দিকটায় লাগে বুলেট। পেটে গুলি লেগেছিল তাই আশা ছিল।
একদিকে চলছে ভারত-পাক গুলির লড়াই। অন্যদিকে জীবনের সঙ্গে লড়াই বিএসফ জওয়ানের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডারের। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় হীরানগর হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে সাতওয়াড়ি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জীবন যুদ্ধে জিতে ফেরা হয়নি বিনয় প্রসাদের। ফিরেছিল শুধু তার মৃতদেহ। একমাস আগের ঘটনা পরিবারের কাছে এখনও তাজা। এইতো সেদিনও ছেলেটার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল শকুন্তলা দেবীর। সন্তান হারা মায়ের একটাই চাহিদা।
বললেন, “আমাদের ছেলে আপনাদের জন্য সব দিয়ে দিয়েছে। ছেলের প্রাণ আপনারা ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। কিন্তু বাকিদের সুরক্ষার কথা ভাবুন অন্তত। এভাবে আর কত মায়ের কোল খালি হবে?” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি জানি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মানে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। তবু মন কি মানে? যুদ্ধ তো বাঁধেনি। তাহলে অন্তত সুরক্ষা আরও বাড়ানো হোক যাতে এত সহজেই কোনও মায়ের কোল খালি না হয়।”
সূত্র মারফত খবর পাওয়া গিয়েছিল পাকিস্তানের স্নাইপার বাহিনী নাকি সীমান্ত পেরিয়ে এই আক্রমণ করেছিল। হাওড়া ডবসন রোড নিবাসী বি.এস.এফ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার বিনয় প্রসাদের দেহ রাজ্যে আসে তার দিন দুয়েক পড়ে। সকাল ১১.১৫ মিনিটে হাওড়ার বাড়িতে শহীদের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। অগণিত মানুষ কাতারে কাতারে আসেন শহীদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন লক্ষীরতন শুক্ল এবং বিধায়ক অরূপ রায়।