আল ফায়েদের বিরুদ্ধে ১১১ জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ
আল ফায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ১১১ নারীর মধ্যে ২১ জন পুলিশের কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানান ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে। আর গত সেপ্টেম্বর মাসে ফায়েদের ওপর বিবিসি একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করার পর আরো ৯০ জন নারী অভিযোগ জানান।
প্রায় চার দশক ধরে ১১১ জনেরও বেশি নারীকে মিসরীয় ধনকুবের মোহাম্মদ আল ফায়েদ ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ এনেছে পুলিশ। যার মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সী ভুক্তভোগীর বয়স মাত্র ১৩ বছর ছিল বলেও জানায় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
৯৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করা আল ফায়েদকে ব্রিটেনের অন্যতম কুখ্যাত যৌন অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ প্রশ্ন তুলেছে যে, কীভাবে তিনি এত দিন তার অপরাধ চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, বিলাসবহুল নাইটসব্রিজ স্টোর হ্যারডসের সাবেক মালিক ফায়েদকে সহযোগিতা করার সন্দেহে পাঁচজন নাম প্রকাশ না করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে.
গত মাসে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ফায়েদকে তার নারী কর্মীদের হয়রানি করতে সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যে একজন তরুণীও ছিলেন, যিনি তার যৌন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
আল ফায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ১১১ নারীর মধ্যে ২১ জন পুলিশের কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানান ২০০৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে। আর গত সেপ্টেম্বর মাসে ফায়েদের ওপর বিবিসি একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করার পর আরো ৯০ জন নারী অভিযোগ জানান।
লন্ডন পুলিশ বলছে, ১৯৭৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নে আল ফায়েদের যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি পৃষ্ঠার প্রমাণ পর্যালোচনা করেছে তারা। প্রমাণের মধ্যে ভুক্তভোগীদের বিবৃতিও রয়েছে।
গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই লন্ডন পুলিশ জানতে পারবে যে, তারা হ্যারডসের মালিকের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার অভিযোগে তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে স্বাধীন তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে কিনা।
পুলিশের নজরদারি সংস্থা ইন্ডিপেনডেন্ট অফিস ফর পুলিশ কন্ডাক্ট (আইওপিসি) ব্রিটেনের বৃহত্তম পুলিশ বাহিনী লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশেরই তদন্ত করা উচিত বলে বিবেচনা করছে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেন, ২০০৮ সালে তদন্তের মান সম্পর্কে দুই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডন পুলিশ এই মামলাগুলো স্বেচ্ছায় ইন্ডিপেনডেন্ট অফিস ফর পুলিশ কন্ডাক্ট-এর কাছে পাঠিয়েছে।
মেট পুলিশের স্পেশালিস্ট ক্রাইম কমান্ডের কমান্ডার স্টিফেন ক্লেম্যান বলেছেন, তিনি স্বীকার করেন যে, পুলিশের অতীতের আচরণ মানুষের বিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে। তবে তিনি অন্য ভুক্তভোগীদের সামনে আসার আহ্বান জানান।