প্রধান খবরভারত

আসামে বন্যায় আরও ৭ জনের মৃত্যু

রয়টার্সঃ ভারতের আসামে বন্যায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ)।

এতে বন্যায় ওই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯০ জন হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যের অনেক অংশে পানি নামতে শুরু করলেও শনিবারও আসামের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল।

এদিকে আবহাওয়ার এক বার্তায় গুয়াহাটিতে আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএমসি) জানিয়েছে, রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং কোকরাঝাড় জেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আসামে মে মাসের শেষে যে বান ডেকে এনেছিল ঘূর্ণিঝড় রেমাল, তার রেশ না কাটতেই দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটি। দীর্ঘসময় পার হলেও সেখানকার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কোনো ঈঙ্গিত নেই।

ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস জানায়, গোয়ালপাড়া জেলায় নৌকাডুবির ঘটনায় পাঁচজন এবং নগাঁও ও জোরহাট জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে একজন মারা গেছেন।

রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও ২৪টি জেলার ১২ লাখ ৩৩ হাজার বেশি মানুষ এখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২৬ জেলার ২৫৪৫ গ্রামে ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৮ জনকে বন্যার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি হল কাছাড়, ধুবরি, নগাঁও, কামরূপ, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, নলবাড়ি, বরপেটা, ধেমাজি, শিবসাগর, গোয়ালপাড়া, জোরহাট, মরিগাঁও, লখিমপুর, করিমগঞ্জ, দারাং, মাজুলি, বিশ্বনাথ, হাইলাকান্দি, বঙ্গাইগাঁও, দক্ষিণ সালমারা, চিরাং, তিনসুকিয়া, কামরূপ (এম)।

এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ধুবড়ী জেলার, সেখানে বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ৩২৬ জন। এরপরে আছে কাছাড়, সেখানে বানে ভুগছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৯ জন।

রাজ্যের অনেক নদীর পানিস্তর এখন কমতে শুরু করছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির স্তর এখনও নিয়ামাতিঘাট, তেজপুর, ধুবরি, চেনিমারী (খোয়াং) বুড়িডিহিং নদী, নাংলামুরাঘাটে দিসাং নদী এবং করিমগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যাকবলিত জেলাগুলোর ৩১৬টি ত্রাণ শিবির ও বিতরণ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি মানুষ।

এএসডিএমএ বন্যার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ৬,৬৭,১৭৫টি প্রাণীও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে বন্যায় এখনও পর্যন্ত ১০টি গন্ডারসহ ১৮০টি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ফিল্ড ডিরেক্টর সোনালী ঘোষ জানান, বন্যার পানিতে ১০টি গণ্ডার, ১৫০টি হরিণ, ২টি করে সোয়াম্প ডিয়ার ও শম্বরের মৃত্যু হয়েছে।

বন্যার সময় পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগ দুটি গন্ডার শাবক ও দুটি হাতির শাবকসহ ১৩৫টি প্রাণী উদ্ধার করেছে।

জাতীয় উদ্যানের ৩৫টি বনশিবির এখনও তলিয়ে আছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension