
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো! নিজেকে নিজে বলি। আমি ক্লান্ত, শ্রান্ত, ভ্রান্ত, অবসন্ন। এমনকি বিদ্রোহী হলেও, কিছুই যায় আসে না কারোরই। মাঝে, মাঝে মনে হলে নিজের সাথে নিজেই কথা বলি। গান শুনি। লেখালেখির ‘বদঅভ্যাস’-এর কারণে কালি ও কলমে কিছু কথা আসে। পড়েন খুবই অল্প সংখ্যক কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু। এর বাইরে এইসবের কার্যকরী কোনো ভূমিকাই নাই। জানি , শুনি ও বুঝি। আমার ক্লান্তি, হতাশা, কষ্ট, স্বপ্ন। আমারই।
যুক্তরাষ্ট্রে যাপিত জীবনের বয়স প্রায় চার দশকের কাছাকাছি তো হবেই। এই চার দশকে অনেক কিছু শিখছি, দেখছিও এই জীবনে। এখনও শিখি। এই শেখার তো শেষ নাই। এর মধ্যে চারটা যুগ পাড়ি দিলাম। চার রকম পরিবর্তনও ঘটেছে। অল্প থেকে বড় হয়েছি, একটু একটু করে। আমাদের নানা রকম বিকাশ ঘটেছে নানান দিকে। হ্যাঁ, এইসব যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের কমিউনিটির কথাই। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্যের বৈচিত্র্যতা এবং এর সুযোগ-সুবিধাও অন্যান্য রাজ্য থেকে একটু বেশি। হয়ত এই কারণে হতাশাও বেশি কিনা কে জানে!
নিউ ইয়র্ক একটা সত্যিকারের কসমোপলিটান স্টেট। এখানে মানুষের জাতীয়তা, ধর্ম, বর্ণ, পোশাক, ভাষা, খাবার, প্রাচুর্যে ভরা। সেইগুলোর প্রতিটাই এখানে বসবাসরত বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর নানান নৃতাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, ও সাংস্কৃতিক পরিচয়কেও বহন করে। এইসব নিয়ে আলোচনা করতে লম্বা সময় দরকার। পাঠক বিরক্ত হবেন। তাই চেষ্টা করব কিছু কথা, সবকথা, না। যত সংক্ষিপ্ত আকারে বলা যায় বা লেখা যায়।
নিউ ইয়র্কে কয়েকটা বাঙালী জনবসতি বা এলাকা আছে। এর মধ্যে ‘কুইন্স’ ‘বরো’ অন্যতম। ‘কুইন্স’ বরোয় অনেকগুলো ‘এলাকা’। এলাকাগুলো আমাদের বাঙালী কমিউনিটির কাছে খুবই সুপরিচিত। যেমন এসটোরিয়ার ৩৬ এভিনিউ, ৭৩ স্ট্রিট, জ্যাকসন হাইটস। জামাইকায় হিলসাইড এভিনিউ। উল্লেখযোগ্য তালিকায় পড়ে। এর বাইরে আরও কিছু এলাকাও আছে। কুইন্সের পরে ব্রুকলিন বরোর ‘চার্চ ম্যাকডোনাল এভিনিউ ও তার আশেপাশে কিছু এলাকা। ব্রংকসের ‘পার্কচেস্টার’।
এইসব এলাকা বাঙালী অধিবাসীদের নানা রকম কর্মকাণ্ডে মুখরিত থাকে সবসময়। নিউ ইয়র্কের এইসব এলাকায় এলে কখনও মনেও হবে না যে, আমি বা আপনি, কেউ আমরা বাংলাদেশের বাইরে আছি। কেউ কেউ ঠাট্টা করে বলেন, নিউ ইয়র্ক ঢাকার রাজধানী। হয়ত বা!
এই শহরেই আমার বসবাস দীর্ঘ চার যুগের। এখানকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে তেমন সম্পৃক্ততা বা যোগাযোগ নাই সেই অর্থে। বলতে, দূরে থেকে এইসব দেখি, পড়ি। জানি, এইটুকুই। স্থানীয় বাঙালীদের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম এখানকার সাপ্তাহিক বাংলা পত্রপত্রিকা। গত প্রায় তিন যুগ হবে, নিউ ইয়র্কের সাপ্তাহিক নানান বাংলা কাগজে দেশের রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও নৈতিকতা বিষয়ে লেখালেখি করি বলেই এই যোগাযোগ, তাও সীমিত পরিসরে।
এখানে সাপ্তাহিক ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রথম লেখা শুরু করি, ১৯৮৭ সালে। একসময়ের ‘প্রবাসী’ পত্রিকা, এর মালিকানা পরিবর্তন হয়। পড়ে পত্রিকাটা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর লেখালেখি করি কিছুদিন সাপ্তাহিক ‘বাঙালী’ পত্রিকায়। ‘বাংলা পত্রিকা’, ‘সাপ্তাহিক বাংলাদেশ’, ‘পরিচয়’ ‘বেহক কথা’ পত্রিকায়। সবচেয়ে বেশি লেখালেখি করেছি, সাপ্তাহিক ‘ঠিকানা’য়, বিরতিহীন তিন যুগ। এইসবগুলো পত্রিকার কাছে তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞ। এখন বিগত তিন বছর থেকে লিখছি, নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত নতুন সাপ্তাহিক ‘দেশ’-এ। এই পত্রিকার কাছেও ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। বিগত তিন বছর সাপ্তাহিক ‘দেশ’ বিরতিহীন আমার লেখা প্রকাশ করছে তাঁদের ‘উপসম্পাদকীয়’ পাতায়। নিঃসন্দেহে এটা আমার জন্য ব্যক্তিগত ভালোলাগা ও গৌরবের বিষয়। আমার কাছে এটা আমার যোগ্যতার চাইতেও অনেক বেশি পাওয়া ‘সম্মান’। আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ তাই ‘দেশ’ পত্রিকার কাছে।
এইসব পত্রিকার খবরাখবর, আমাদের নিউ ইয়র্কবাসী বাঙালীদের সম্পর্কে নানান তথ্য ও চিত্র তুলে দেয়। বাঙালীদের নানান কৃতিত্ব এবং অর্জন সম্পর্কে আপডেট করে আমাদের। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই একটা পত্রিকা পড়ি, দেখি। পড়তে পড়তে ও দেখতে দেখতে এতগুলো বছর কেটে যায়। এখন একটা পত্রিকা পড়লেই হয়। এই শহর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক এই পত্রিকার সংখ্যা এখন ১০-১২টা হবে। সম্প্রতি এখান থেকে নতুন আরেকটি পত্রিকা বের হয়েছে ইংরেজি ভাষায়। ‘দ্য জেনারেশন’। সম্পাদক, নতুন জেনারেশনের প্রতিভাবান সাদিয়া জে. চৌধুরী।
১৬ পৃষ্ঠার এই নতুন পত্রিকার নবম সংখ্যা (অক্টোবর, ৩১, ২০২৩) পড়ার সৌভাগ্য হয়। সাধারণত পত্রিকার ফিচার বা নিউজ পড়ার চাইতে মনোযোগ দিই, ’সম্পাদকীয়’ পড়ায়। উল্লেখিত পত্রিকার বেলাতে সেটাই করি। চমৎকার ইংরেজি এবং সহজ ভাবে লেখা এডিটোরিয়াল বা সম্পাদকীয়; সময়োপযোগী এবং একজন দক্ষ সম্পাদকের হাতে লেখা বলেই মনে হয়। এটা কন্টিনিউ করতে পারলে নিউ ইয়র্কে নতুন বাংলাদেশী প্রজন্ম এই ক্ষেত্রেও বিশেষ নিদর্শন রাখবেন, বলেই বিশ্বাস করি।
আগামী প্রজন্ম এখানে বাংলায় কিছু পড়ার চাইতে সেটা ইংরেজিতেই পড়তে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন ও করবেন। এই সাহসী কাজের জন্য সম্পাদক ফৌজিয়া চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সাদিয়ার বাবা, শাহ্ জে. চৌধুরী, এই শহরের সফল একজন ব্যবসায়ী। পাশাপাশি বিভিন্ন বাণিজ্যের উদ্যোক্তা ও সামাজিক ‘সেবামূলক’ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রাখেন সবসময়। যোগ্য বাবার যোগ্য কন্যা সাদিয়াকে নিয়ে আমাদের গর্ব ও প্রত্যাশাও তাই অনেক।
আরও নানান ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশীরা এখানে সফলতা ও দক্ষতাও প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য বলি, বা সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির গৌরব করবার ব্যাপারে অনেক কিছুই যোগ হয়েছে কত চার দশক। একে অস্বীকার করবার কোনো কারণ নাই, যুক্তিও নাই। অনেক সফলতা অর্জন করতে গেলে কিছু বিফলতা তো থাকেই। এটা সময়ের সাথে কমে যাবে বলে আশা করি। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এখন থেকেই, আমাদের মধ্যে যে কিছু ‘অপেশাদারী অ্যাটিচিউড’ এবং কাজকর্ম চলে তার প্রতি।
এই দিকটায় আমাদের আরেকটু সচেতন হওয়া দরকার এখন। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে। দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁয় আমাদের ‘সার্ভিস মান’ বা সেবার দিকটা বেশ দুর্বল। এই সেক্টরে আমাদের ‘অপেশাদারী’ ব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গি খুবই দৃষ্টিকটু। দৃষ্টিকটু এই কারণে বলছি যে, এর সাথে যারা জড়িত তাঁরা একেবারেই অশিক্ষিত কেউও না। তাই বিষয়গুলো দৃষ্টিকটু লাগে। পাশাপাশি আমাদের ক্রেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচার ব্যবহার, বাঙালী প্রতিষ্ঠানে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘প্রোপার’ বলেও মনে হয় না। বিদেশী সেরকম কোনো স্থানে গেলে আমরা অনেক বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করি। সে কারণে আমাদের আপাতত প্রবাস জীবনে অনেক আশা, হতাশা, দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, সবই আছে।
একটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। এখানে এসে আমরা দেশের রাজনীতির ব্যাপারে যে ভূমিকা রাখছি সেটা দুঃখজনক এবং অনেক ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত ও অরুচিকর লাগে। বিদেশে বসে দেশীয় রাজনীতির কোনো প্রয়োজন নাই বা এতে দেশের কোনো লাভ হয় না। প্রবাসে আমাদের দেশীয় রাজনীতির ‘আইডেন্টিটি’ কি খুব বেশি জরুরি বা দরকার কি?
এইসব কথার ফাঁকে ফাঁকে হতাশা সৃষ্টি হয়, কষ্ট হয়; এত দূরে বসেও যখন দেশের রাজনীতির দুর্দশা কথাও পড়ি। এই সপ্তাহের (১, নভেম্বর, ২০২৩, ‘দেশ’) পত্রিকাতে তেমন কিছু হতাশার কথা পড়লাম। বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি, নুরুল আম্বিয়া সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সরকার এখন আর জনপ্রিয় না। তাঁর মতে, ২৮ অক্টোবর বিএনপি’র সভা পণ্ড করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগ। সম্ভবত পূর্ব পরিকল্পনা মতো। এই সভাকে কেন্দ্র করে সেখানে ‘সাউণ্ড হ্যাণ্ড গ্রেনেডের’ আক্রমণ সুপরিকল্পনা মতোই হয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া। প্রতিপক্ষ দলের নেতাদের গ্রেফতার। এইরকম অনেক কাজ ২৮ অক্টোবর ঘটেছে, যা বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলে, এই নেতাও মনে করেন।
খুব সংক্ষেপে বলা যায়, কত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে আমরা দেশ ও প্রবাসেও যেসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ড দেখছি। বিশেষ করে সরকারের। সেইগুলোকে বিবেচনা করলে সহজেই বোঝা যাবে যে, গণতন্ত্রের জন্য এবং দেশের মঙ্গলের জন্য আওয়ামী লীগের ভূমিকা গত পনের বছর ইতিবাচকের চাইতে নেতিবাচক অনেক বেশি। আমরা অনেকেই বলি, বিগত পনের বছর দেশে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।
সেই কাজগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রায় শোনা যায় কিছু কথা। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলদেশে টানেল, বিমানবন্দরের আধুনিকরণ, নতুন টার্মিনাল, সরকারি সংস্থার কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি— এইসবের কথা। ঠিক আছে। তবে এটাই কি কেবল উন্নতি! যদি পালটা প্রশ্ন হয়, বিগত ১৫ বছরে আমাদের শ্রমিকের সর্বনিম্ন ‘মজুরি’ কতটা বেড়েছে? নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এবং মুদ্রাস্ফীতির সাথে সেই বৃদ্ধি কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ? দেশে ‘মেগা প্রজেক্ট’ হয়েছে অনেক। মেগা দুর্নীতিও কি হচ্ছে না? শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের ‘মেগা উন্নতি’ বা পরিকল্পনা কোথায়! সরকারি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা এবং সেখানে চিকিৎসার উন্নতি কতটা হয়েছে, দেশের সাধারণ নাগরিকদের প্রয়োজনে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান এবং শিক্ষকদের মান কতটা বেড়েছে বিগত পনের বছর? দুর্নীতিও বা কতটা কমেছে বিগত পনের বছরে? মানুষের নীতি নৈতিকতা কি আদৌ উন্নত হয়েছে? আমাদের বিচার বিভাগের মূল নিয়ন্ত্রণ এখন কার হাতে? মানবিকতা কোথায় নেমেছে গত পনের বছর! যে কোনো ‘উন্নতি’-এর সাথেই এইসব চিন্তা, প্রশ্ন ও বিবেচনা কিন্তু ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত।
এর যে কোনো দিকই আমরা দেখি বা জানি, সেটা দারুণ হতাশার। আশার কোনো রেখা দেখা যায় না এখানেও। এইসবের পাশাপাশি সরকারের এবং সরকারি দলের প্রতিদিনের সীমাহীন মিথ্যাচারিতা এবং সরকারের প্রতিপক্ষদের সাথে তাদের দুর্ব্যবহার। অবাক করে বৈকি। এইগুলোর সাথে আমাদের স্বাধীনতার কোন্ চেতনা যুক্ত! বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকেই আমরা এখানে মূলত গণতন্ত্রের নামে যাই দেখছি; সেটা একনায়কতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না। এই প্রবণতাই বাড়ছে ক্রমান্বয়ে।
হ্যাঁ স্বীকার করি, এক ধরনের বাস্তবতার অর্থ হচ্ছে ‘জোর যার মুল্লুক তার’। বাস্তবতা মানে, জৌলুশ ও ‘ব্যক্তিগত’ কমফোর্ট জোন তৈরি করা। সেটা রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাচারিতা বা স্বৈরতন্ত্র। এইসব বৈধ বা জায়েজ। আমাদের প্রজন্ম, যারা ষাটের দশকে বড় হয়েছি, তাদের অনেকের কাছে বর্তমান সময়টা দুর্বিষহ এবং ক্লান্তিকর। হয়ত বা এর থেকে কোনো মুক্তি বা পরিত্রাণ আমাদের এই প্রজন্ম আমরা নাও দেখতে পারি। তাই কিছু হতাশা, কিছু কষ্ট ও পরাজয় নিয়ে আমরা একে একে চলে যাব এই প্রজন্ম। এর সংকেত বা ঘন্টাধ্বনি মাঝে মাঝে এখন শুনি কান পেতে। নুতনের জন্য পুরাতনকে স্থান ছেড়ে যেতেই হয়। এটাও বাস্তবতা। এখন আমাদের আর ‘স্বপ্ন’ দেখার কিছুই নাই। কেবল অপেক্ষা ছুটির ঘন্টার। তাই হতাশা নয়, প্রকৃতির নিয়মকে মেনে শুধু বলা, যারা নতুন তারা সম্মুখে এগিয়ে যাও, পেছন দিকে না। আমাদের তো যেতেই হবে এখন। তখন আমাদের আর পেছনে ফেরা কেন। নজরুলের একটা জনপ্রিয় কবিতার কয়েকটা লাইন প্রবাসে এবং স্বদেশে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য—
“দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে!
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।।
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ-
ছিঁড়িয়াছে পাল কে ধরিবে হাল, কার আছে হিম্মত।
কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত,
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।।”