
কোভিড নিয়ে নীরব হয়ে গেলেন শি চিন পিং
প্রায় তিন বছর ধরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং ‘জিরো কোভিড’ নীতিতে অনড় থাকলেও, এই বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে দেশটিতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের পর তিনি বেশ নীরব হয়ে গেছেন। অথচ শুরু থেকেই তিনি নিজেকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে জনগণের যুদ্ধের ‘কমান্ডার ইন চিফ’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
সিএনএন লিখেছে, চীনের মানুষের জীবনকে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ ও কার্যকর করায় বেশ প্রশংসিতও হয়েছিলেন। কিন্তু সেই সাফল্য তিনি ধরে রাখতে পারেননি। কারণ তার ব্যয়বহুল এই কোভিড দমনের কৌশলটি দেশব্যাপী বিক্ষোভের পর আকস্মিকভাবে ভেঙে গেছে এবং তিনিও বেশ চুপ হয়ে গেছেন।
দেশজুড়ে কোভিড টেস্টিং বুথ, স্বাস্থ্য কোড স্ক্যানিং এবং লকডাউনের মতো বাধাগুলো দ্রুত তুলে নেয়া হচ্ছে। যেহেতু সংক্রমণ ব্যাপকভাবে চলছে, কর্তৃপক্ষ ভাইরাস-ট্র্যাকিং অ্যাপটিও বাতিল করেছে এবং উপসর্গবিহীন সংক্রমণ জানানোর নির্দেশনাও বাদ দিয়ে দিয়েছে।
কঠোর বিধিনিষেধে শিথিল করায় চীনে অনেকেই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বস্তি পেয়েছেন। কিন্তু একই সঙ্গে কোভিডের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যয় নিয়ে হতাশও হয়ে পড়েছেন। কারণ শুরু থেকেই কোভিড সংক্রমণের চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করছিল, কিন্তু এবার বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে আসায়, সাধারণ জনগণের ওপরই এখন নিজেদের স্বাস্থ্যরক্ষার দায়িত্ব বর্তেছে।
কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর থেকে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে করোনাভাইরাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি। সর্বশেষ গত ৩ ডিসেম্বর চীন কোভিডে মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল। দেশটি এখন পর্যন্ত মহামারিতে ৫ হাজার ২৩৫ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। তীব্র বিক্ষোভ ও জন অসন্তোষের মুখে ডিসেম্বরেই চীন বিশ্বের অন্যতম কঠোর কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে, যে কারণে সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতিও দেখা যাচ্ছে। আগামী মাসে চান্দ্র নববর্ষের মধ্যেই ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে ব্যাপকভাবে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।