
চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান মারা গেছেন
স্ত্রীর মৃত্যুর একদিন পরই না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। উত্তরার নিজ বাসায় তিনি ঘুমের মধ্যে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তিনি উত্তরার নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে মারা যান। পরে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোহানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানা।
সময় সংবাদকে তিনি বলেন, সোহান দুপুরে খাবার খেয়ে নিজ বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। এরপর দরজা খুলে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
পরিচালক সোহানের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এর আগে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেন সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রী প্রিয়া।
নব্বই দশকের শুরুর দিকের কথা, সিনেমাপ্রেমী বাঙালিদের জন্য তখন এক সোনালী সময়। সেই উজ্জল সময়ে আলোর ঝলকানি হয়ে চলচ্চিত্রের জন্য নতুন এক ক্ষেত্র তৈরি করে ফেলল ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। বাঙালি দর্শক পেলো অসাধারণ এক সিনেমা। আর পেলো দুই প্রিয় মুখ মৌসুমী ও সালমান শাহ। এর মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত দর্শক রুচিতে নতুন এক মাত্রা যুক্ত করলো।
এই অসাধারণের রূপান্তরের কাণ্ডারি তরুণ পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। প্রণয়ধর্মী সিনেমা নির্মাণ করে নিজের আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছিলেন। তারকা তৈরির কারিগর ছিলেন তিনি। সালমান শাহ, মৌসুমী থেকে শুরু করে শাকিব খান- অনেকেই তারকা হয়েছেন তার হাত ধরেই।
সোহানুর রহমান সোহানের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে, পরিচালক শিবলী সাদিকের সহকারি হিসেবে। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় সোহানুর রহমান সোহান নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে খ্যাতি লাভ করেন এ নির্মাতা।
কেয়ামত থেকে কেয়ামতের পর ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘কোটি টাকার প্রেম’ সহ অনেকগুলো ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। কর্মজীবনে টানা দুইবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব ও দুইবার সহসভাপতি ও একবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সোহানুর রহমান সোহান। তার মৃত্যুতে কান্ডারি হারালো চিত্রাঙ্গন।