অর্থনীতিপ্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

চীনা পণ্যে শুল্ক কমাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য সংঘাত কমাতে আমদানিকৃত চীনা পণ্যের শুল্ক হ্রাসের পরিকল্পনা বিবেচনা করছে। বুধবার এক সরকারি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষাপটেই শুল্ক কমানো হতে পারে এবং এটি একতরফাভাবে নেওয়া হবে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুল্ক হ্রাসের এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বর্তমানে চীনা পণ্যের উপর প্রযোজ্য ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশের মধ্যে আনা হতে পারে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুয়ার্স ৫০০ সূচক মধ্য সকালে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্পের ইতিবাচক মন্তব্যের পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমরা যে চুক্তি করব, তাতে তাদের পণ্যের শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণে কমবে।’ তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘তারা যদি চুক্তি না করে, তাহলে আমরা নিজেরাই শর্ত ঠিক করে নেব।’

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, প্রশাসন একটি স্তরভিত্তিক শুল্ক কাঠামোও বিবেচনা করছে। গত বছর হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের চীন কমিটি যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তার সঙ্গে মিল রেখে এই কাঠামো তৈরি হতে পারে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয় এমন পণ্যের জন্য ৩৫ শতাংশ শুল্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পণ্যের জন্য কমপক্ষে ১০০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হবে। এই শুল্ক ধাপে ধাপে পাঁচ বছরে বাস্তবায়নের প্রস্তাবও ছিল।

জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা তীব্র হয়। বর্তমানে আলোচনার মাধ্যমে এই সংঘাত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

বুধবার হোয়াইট হাউজ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে সূত্রগুলো জানিয়েছে, আলোচনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং একাধিক বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে।

বাণিজ্য নীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক কমানোর এই পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে চীনের পক্ষ থেকে কী ধরনের সাড়া আসে, সেটিই এখন মূল বিষয়।

এদিকে, ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের প্রধানকে বরখাস্তের হুমকি থেকে সরে আসায়ও বাজার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাণিজ্য সংঘাত কমলে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য তা ইতিবাচক সংকেত বয়ে আনবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension