জনসংখ্যার চেয়ে আধার কার্ডের জন্য আবেদনের সংখ্যা বেশি, আসামে নতুন সিদ্ধান্ত
অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত করতে আগেই এনআরসি বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস চালু করেছিল ভারতের আসাম সরকার। কিন্তু সেখানেও বিস্তর গরমিল ধরা পড়ে। বেশ কিছু জেলায় মোট জনসংখ্যার চেয়ে আধার কার্ডের জন্য আবেদনের সংখ্যা বেশি হতেই বিষয়টি নজরে আসে সরকারের। এবার এ বিষয়ে বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
জালিয়াতি ধরতে ১ অক্টোবর থেকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) চালু করতে চলেছে আসাম সরকার। এক সাংবাদিক সম্মেলনে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আধার কার্ডের জন্য আবেদনগুলো জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। অর্থাৎ সন্দেহজনক নাগরিক রয়েছে। তাই তাদের চিহ্নিত করতে এসওপি চালু করা হচ্ছে। যাদের কাছে এনআরসির আবেদন পত্রের নম্বর নেই, তারা আধার কার্ড পাবেন না।’
তবে শুরুতেই যে ৯ দশমিক ৫৫ লাখ মানুষ আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছে আসাম সরকার। কারণ, তাদের ওই আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় বায়োমেট্রিক্স লক করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : গণহত্যার মামলা: শেখ হাসিনা ইস্যুতে মোড় পাল্টে দিতে পারে ভারত
মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, চারটি জেলায় মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক আধার কার্ডের আবেদন জমা পড়েছে। এই জেলাগুলো হল বারপেটা (১০৩.৭৪ শতাংশ) ধুবরি (১০৩ শতাংশ) এবং মরিগাঁও এবং নগাঁও উভয় জেলাতে জমা পড়া আধার কার্ডের আবেদনের সংখ্যা জনসংখ্যার ১০১ শতাংশ!
হিমন্ত বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিশনার কর্তৃক অনাপত্তি শংসাপত্র দেওয়ার পরেই নতুন আবেদনকারীদের আধার কার্ড দেয়া হবে। সব দিক খতিয়ে দেখে এই ধরনের সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে। যদি আবেদনকারীর এনআরসি এআরএন থাকে তবে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি ২০১৪ এর আগে রাজ্যে ছিলেন।’
সরকারের দাবি, গত ২ মাসে বেশ কয়েকজন সন্দেহজনক বাংলাদেশিকে আটক করা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। সে কারণেই নতুনদের আধার কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এসওপি চালু করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৪ জন অবৈধ নাগরিককে চিহ্নিত করেছে আসাম সরকার। এর মধ্যে ৪৮ জনকে চিহ্নিত করা হয় করিমগঞ্জ থেকে। বাকিদের মধ্যে ৪ জনকে বোঙ্গাইগাঁওয়ে এবং ধুবরি জেলায় ১ জন করে। এদের মধ্যে ৪৫ জনকে তাদের দেশে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।