যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প ও পর্নোস্টার স্টর্মির মধ্যে আসলে কী ঘটেছিল?

সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ঘটনা ধামাচাপা দিতে গোপনে তাকে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযুক্ত হয়েছেন।

ড্যানিয়েলসের দাবি, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল এবং ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই বিষয়ে মুখ না খুলতে তাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী। পরবর্তীকালে বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাম্পের সেই আইনজীবী মাইকেল কোহেনের কারাদণ্ড হয়। তবে শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প।

মূলত পর্নো তারকার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ হওয়ার ঘটনাটি অনেক আগের বলে দাবি করা হলেও সর্বমহলে বিষয়টি চাউর হয় ২০১৮ সালে। ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে বিভিন্নভাবে চাপ, হুমকি ও নির্বাচনের আগমুহূর্তে উৎকচ প্রদানের ঘটনাবহুল তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গেছে, ড্যানিয়েলসের আসল নাম স্টেফানি ক্লিফোর্ড। ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়টি তিনি প্রথম প্রকাশ করেন ২০১১ সালে। সেই সময় নিজের আত্মজীবনী ‘ফুল ডিসক্লোজার’ নিয়ে সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘ইন টাচ’-এর সঙ্গে আলাপে বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেন।

ড্যানিয়েলস জানান, ২০০৬ সালে জুলাইয়ে একটি গলফ টুর্নামেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে তার দেখা হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাডার রিসোর্ট এলাকার লেক তাহোর হোটেল কক্ষে তারা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন। তখন ট্রাম্পের এক আইনজীবী সেই অভিযোগ বেশ জোরেশোরেই অস্বীকার করেছিলেন।

নিপীড়নের বিষয়টি কাউকে না জানাতে ট্রাম্প তাকে বলেছিলেন কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে এই পর্নো তারকা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তখন তাকে (ট্রাম্প) চিন্তিত মনে হয়নি। তাকে একরকম উদ্ধতই দেখাচ্ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি ওই ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে সবকিছু ঘটে ট্রাম্পের ছোট ছেলে ব্যারন ট্রাম্পের জন্মের চার মাস পর।

স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের যৌন সম্পর্কের ঘটনাটি তখন ছাপতে পারেনি ইন টাচ ম্যাগাজিন। সিবিএস নিউজের ‘সিক্সটি মিনিট প্রোগ্রাম’ এর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ড্যানিয়েলসের ওই সাক্ষাতের পর ইন টাচ ম্যাগাজিনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।

অবশেষে ২০১৮ সালে ট্রাম্প ও স্টর্মি ড্যানিয়েলসের যৌন সম্পর্কের বিষয়টি ছাপে ইন টাচ ম্যাগাজিন।

এর কয়েক সপ্তাহ পর ‘সিক্সটি মিনিট’ অনুষ্ঠানে ড্যানিয়েলস জানান, ২০১১ সালে ইন টাচ ম্যাগাজিনকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হওয়ার পর পরই তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ড্যানিয়েলস বলেন, লাস ভেগাসে এক ব্যক্তি তার কাছে আসেন। এর পর তার শিশু মেয়েকে জড়িয়ে হুমকি দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, খুব সুন্দর ছোট্ট মেয়ে। যদি তার মায়ের কিছু হয়ে যায়, তবে সেটি বেশ বিব্রতকর হতে পারে।

ড্যানিয়েলস জানান, পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে মাইকেল কোহেনের কাছ থেকে তিনি এক লাখ ৩০ হাজার ডলার পান এই ঘটনা গোপন রাখতে। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সেই সময় কিছু না বলে ঐ অর্থ গ্রহণ করেন বলে দাবি করেন তিনি।

এছাড়া সিক্সটি মিনিট এপিসোড সম্প্রচারের আগে আইনজীবী কোহেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি শেল কোম্পানি ড্যানিয়েলসকে দুই কোটি ডলারের মামলার হুমকি দেয়। ড্যানিয়েলসকে ওই কোম্পানি জানায়, তিনি অপ্রকাশিত চুক্তি অথবা ‘ঘটনা ধামাচাপা’ দেওয়ার চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন।

সিবিএস শোকে এই পর্নো তারকা জানান, তিনি ওই চুক্তি ভেঙে জাতীয় টেলিভিশনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলায় ১০ লাখ ডলার জরিমানার ঝুঁকিতে ছিলেন। তবে নিজেকে রক্ষা করার মতো সক্ষম হওয়াও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension