দেশ ছাড়লেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় প্রার্থী গনসালেস
ভেনেজুয়েলার সাবেক বিরোধীদলীয় প্রেডিসন্টে প্রার্থী এদমুন্দো গনসালেস কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে স্পেনের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন।
ভেনেজুয়েলা ও স্পেনের কর্মকর্তারা শনিবার রাতে এ তথ্য দিয়েছেন বলে খবর রয়টার্সের।
ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট দেলসি রদ্রিগেজ সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, “গনসালেস বেশ কয়েকদিন আগে স্বেচ্ছায় কারাকাসের স্পেনীয় দূতাবাসে আশ্রয় চেয়েছেন।”
চলতি বছরের জুলাই মাসে ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিরোধীদলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন গনসালেস (৭৫) ।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস সামাজিক মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে বলেন, “এদমুন্দো গনসালেস স্পেনীয় বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজে কারাকাস থেকে স্পেনের পথে রওনা হয়েছেন।”
গনসালেসের একটি অনুরোধে মাদ্রিদ সাড়া দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই ভেনেজুয়েলায় রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। দেশটির নির্বাচন কমিশন ও শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নির্বাচনে মাদুরো জয়ী হয়েছেন। কিন্তু দেশটির সরকার ভোট যেভাবে পরিচালনা করেছে বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই তার সমালোচনা করেছে।
নির্বাচনে গনসালেস জয়ী হয়েছে বলে দেশটির বিরোধী দল দাবি করেছে। নিজেদের দাবির পক্ষে অনলাইনে ভোট একটি টালি প্রকাশ করে গনসালেস জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছিল তারা।
অনলাইনে এই টালি প্রকাশের সঙ্গে জড়িত থাকার সঙ্গে জড়িত থাকা, সরকারি নথি জাল করার অভিযোগে এবং ষড়যন্ত্রসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ভেনেজুয়েলার অভিশংসকরা তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মার্চে কারাকাসের আর্জেন্টিনা দূতাবাসে ভেনেজুয়েলার ছয়জন বিরোধীদলীয় নেতা রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আর্জেন্টিনার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ভেনেজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রদ্রিগেজকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে আর্জেন্টিনার দূতাবাস ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে কারাকাস।
তারপর থেকে ভেনেজুয়েলায় আর্জেন্টিনার স্বার্থ দেখভাল করে আসছিল ব্রাজিল। কলম্বিয়া ও মেক্সিকোর মতো ব্রাজিলও ভেনেজুয়েলা সরকারকে নির্বাচনের পুরো ফল প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু ভেনেজুয়েলা সরকার তা করেনি এবং দেশটির নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য জয়ী ঘোষণা করে।
শনিবার ভেনেজুয়েলা সরকার দেশটিতে আর্জেন্টিনার স্বার্থ দেখার জন্য ব্রাজিলকে দেওয়া অনুমতি প্রত্যাহার করে।
কারাকাসের এই সিদ্ধান্তে ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করেছে ব্রাজিল। আর আর্জেন্টিনা এই ‘একতরফা’ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করার কথা জানিয়েছে। উভয় দেশ মাদুরোকে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
এসব নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই দেশ ছাড়লেন সাবেক বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এদমুন্দো গনসালেস।