
নারীদের জন্য তালেবানের নতুন নিয়ম
আফগানিস্তানের নারীদের কিছু মানবিক কার্যক্রমে কাজ করার অনুমতি দেয়ার জন্য নতুন নির্দেশিকা তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে তালেবান সরকার। তালেবানদের পক্ষ থেকে এ খবর জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে বলেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি।
বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দাতব্য সংস্থায় আফগান নারীদের কাজ করার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল, তা কিছুটা শিথিলের পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার।
জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তালেবান সরকারের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, দাতব্য সংস্থায় নারীদের কাজ করার বিষয়ে তারা নতুন একটি গাইডলাইন করতে যাচ্ছে। এতে করে সংস্থাগুলোতে নারীরা সীমিত আকারে কাজের সুযোগ পাবেন। জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস জানিয়েছেন, কাবুলে এক আফগান মন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে নারীদের দাতব্য সংস্থায় কাজ করা নিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন তিনি।
মাসখানেক আগে নারীদের বেসরকারি সহায়তা সংস্থায় (এনজিও) কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।
কাবুলে তালেবান সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছেন গ্রিফিথস। বৈঠকগুলোর মূল আলোচ্য বিষয় ছিল দাতব্য সংস্থায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে।
মিশন শেষে গ্রিফিথস ফিরে এসে জাতিসংঘে একটি রিপোর্ট দেন। যেখানে আন্ডারলাইন করে গ্রিফিথস লেখেন, ‘মানবিক কাজে নারীরা অংশ না নিলে আমরা মূল সাহায্যপ্রার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারব না। এ জন্য নারীদের কথা আমাদের শুনতে হবে। আমার ধারণা, তালেবান সরকার আমাদের কথা শুনছে। তারা আমাকে জানিয়েছে, নারীদের কাজ করা নিয়ে তারা নতুন গাইডলাইন প্রণয়ন করবে।’
গ্রিফিথস জানান, আফগানিস্তানের দরজায় দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ছে। এ বছরেই দেশটিতে সর্বকালের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা কর্মসূচি চলবে। সংস্থাগুলো ২ কোটি ৮০ লাখ আফগানকে সহায়তা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এটি দেশটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। এ ছাড়া আফগানিস্তানে গত এক দশকের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছে। গত দুই সপ্তাহে দেশটিতে ১২৬ জন প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মৃত্যুবরণ করেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ এলাকায় হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা চলে যাওয়ায় ৭০ লাখের বেশি গবাদি পশু মারা গেছে।
আর এ অবস্থায় দেশটিতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ তহবিল ভীষণভাবে প্রয়োজন। যে কারণে নারীদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধের চাপ কমিয়ে জাতিসংঘের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার আশায় অনেকটাই নমনীয় হয়ে এসেছে তালেবান সরকার।