অগ্নিঝরা মার্চপ্রধান খবরবাংলাদেশমুক্তিযুদ্ধ

প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ২৬ মার্চ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এরই মাঝে পুরো সৌধ এলাকা ধুয়ে মুছে রংতুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় এসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন। তিনি চলে যাওয়ার পর পরই সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। তার আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সাভারকে।

করোনার কারণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবার ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দেবাশীষ নাগ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ দিন সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টা এবং দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত রাখা হবে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে ধুয়ে মুছে ও বাহারি ফুলের সমারোহে সাজিয়ে প্রস্তুত করে তোলা হয়েছে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। লাল-ইটে সাদা রঙের ছোঁয়া শুভ্রতা ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে লাল টবে শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুল গাছ। গাছগুলোকে ছেঁটে দৃষ্টিনন্দন করার পাশাপাশি লেকের পানিতে নতুন করে রোপণ করা হয়েছে লাল শাপলা। এ ছাড়া স্মৃতিসৌধ এলাকার সড়কগুলোতে বাহারি রঙের বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার করার জন্য চারদিক সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে থাকা সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, মহান স্বাধীনতা দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের লক্ষে সাভার গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সৌধ প্রাঙ্গণকে ধুয়ে-মুছে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। গত ১ মার্চ থেকে প্রায় ১৫০ জন কর্মী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ধোয়া-মোছা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছে।

তিনি বলেন, এ বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন করার কথা রয়েছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ও স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে সৌধ প্রাঙ্গণে সর্ব সাধারণের প্রবেশের ওপর কিছুটা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার জানান, মহান স্বাধীনতা দিবসে সর্বসাধারণের নিরাপত্তার জন্য কয়েক স্তরের বলয় গড়ে তুলা হয়েছে। পাশাপাশি সৌধ প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। প্রতিটি পয়েন্টে পয়েন্টে অস্থায়ী পোস্ট তৈরি করা হয়েছে।

সাভার গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ইতিমধ্যে ১৭ মার্চ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এদিন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরবর্তীতে ১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে, ২২ মার্চ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ও ২৪ মার্চ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং জাতীয় স্মৃতিসৌধ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।❐

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension