
ফিলিপাইনে বিলাসী পণ্যের তালিকায় পেঁয়াজ, কেজি ১৪০০
ফিলিপাইনজুড়ে চলছে তীব্র পেঁয়াজ সংকট। ফিলিপিনো খাবারের প্রধান এই উপাদানটিই এখন জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে একজন ব্যক্তির দৈনিক সর্বনিম্ন মজুরি দিয়েও এক কেজি পেঁয়াজ মিলছে না। ফলে পেঁয়াজ কেনা এখন ফিলিপাইনের সাধারণ জনগণের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে। পেঁয়াজ কেনাকে রীতিমতো বিলাসিতা বলে মনে করছেন তারা।
দেশটিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজ ব্যবহারের মতো ঘটনার কথাও জানা গেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ পেসো করে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৪০০ (১ হাজার ৩৬৩) টাকা। বলা হচ্ছে, সেখানে এখন মাংসের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি।
দেশটির ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমছে। তবু পেঁয়াজ এখনো অনেক ভোক্তাদের জন্য (দামের দিক দিয়ে) একটি বিলাসিতা পণ্যের মতো। এ ছাড়া যাদের এটি কেনার মতো সামর্থ্য আছে তারাও পরিমাণে আগের চেয়ে কম কিনছেন।
একটি রেস্তোরাঁর মালিক বলেন, প্রত্যেক রেস্তোরাঁতেই পেঁয়াজের সংকট। তবে আমাদের ক্রেতারাও বিষয়টি বুঝছেন। তাই তারা এ নিয়ে কিছু বলেন না। কারণ তারা নিজেরাও অনেকেই বাড়িতে রান্নার জন্য ব্যবহারে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন না।
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘আগে রেস্তোরাঁর জন্য একসঙ্গে ৩-৪ কেজি পেঁয়াজ কিনতাম। এখন কিনি মাত্র আধা কেজি করে।’
বিবিসি বলছে, মূল্যস্ফীতির কারণে ফিলিপাইনে খাবার এবং জ্বালানিসহ সব জিনিসের দাম বেড়েছে, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট, ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র খাদ্যের দাম বৃদ্ধিকে জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সংকট কাটাতে তিনি চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটিতে লাল এবং হলুদ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেন।
বিয়েতে ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজ!
ফিলিপাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, পেঁয়াজ সংকটের কারণে দেশটির ইলোইলো শহরে এক বাসিন্দা তার বিয়েতে ফুলের পরিবর্তে পেঁয়াজ ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন।
বায়োরে নামে ওই নারী বলেন, ‘আমি আমার বরকে বলি ফুলের তোড়ার পরিবর্তে পেঁয়াজের তোড়া ব্যবহার করতে। কারণ বিয়ের পর ফুলগুলো ফেলে দেয়া হবে, যা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু পেঁয়াজগুলো বিয়ের পরও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে।’