
ঢাকা আবারো অস্থিতিশীল। এর প্রেক্ষিতে নয়া দিল্লিকে কিছু বিষয় আমলে নিতে হবে। প্রথমত, জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আবারও বিদেশি শক্তির লড়াইয়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ঢাকার ওপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বাংলাদেশে উপস্থিতি বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। এর ফলে শত্রু এবং মিত্রের মধ্যবর্তী এক জটিল অবস্থায় পড়েছে ভারত। দ্বিতীয়ত, মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন বাংলাদেশ। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নেমে গেছে ২০ বিলিয়ন ডলারে। এ দিয়ে তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানো কঠিন। এর সঙ্গে জীবনধারণের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে শতকরা ৯.৬ ভাগে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে ৩রা নভেম্বর। এতে উপরের ওই পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, এ পরিস্থিতি জনঅসন্তোষে রশদ যুগিয়েছে, যেমনটা দেখা গেছে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান প্রতিবাদ বিক্ষোভে। একই সঙ্গে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী বিএনপি ও তার মিত্ররা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের টার্গেট করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আছে জোরপূর্বক গুম ও হত্যার অভিযোগ। এসবই বলে দিচ্ছে, আরও একবার বাংলাদেশের রাজনীতি অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। তাই ঢাকার সঙ্গে নয়া দিল্লির রাজনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করলে তা ভাল হবে। লক্ষ্য হওয়া উচিত হবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে রাজনৈতিক প্রমাণে দাঁড় করানো।
এতে আরও বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অব্যাহত ইতিবাচক গতিধারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আরও উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে আছে আগরতলা-আখাউড়া রেল-সীমান্ত সংযোগকারী রেল লাইন। এ সময়েই নয়া দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ। গত এক দশক ধরে নয়া দিল্লি ও ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথমত তা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতবিরোধীদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কারণে।