
বিক্ষোভ সমর্থন করায় ইরানের দুই অভিনেত্রী গ্রেপ্তার
প্রকাশ্যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দেওয়ার কারণে দুই ইরানি অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্র-চালিত গণমাধ্যমের খবরে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইরনা নিউজ এজেন্সি বলছে, হেঙ্গামেহ গাজিয়ানি এবং কাতায়ুন রিয়াহি নামের দুই অভিনেত্রী ইরানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যোগসাজশ ও কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত।
উভয়েই এর আগে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে মাথার স্কার্ফ ছাড়াই জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন।
সেপ্টেম্বরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর এই বিক্ষোভ শুরু হয়। সঠিক নিয়মে হিজাব না পড়ায় মাহসা আমিনিকে (২২) রাজধানী তেহরান থেকে ইরানের নীতি পুলিশ আটক করে। এর তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।
এমন খবর পাওয়া গেছে যে অফিসাররা তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং একটি গাড়ির সঙ্গে তার মাথায় আঘাত করে। কিন্তু পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করে এবং বলে যে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
গাজিয়ানি এবং রিয়াহি, উভয়ই একাধিক পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী। রবিবার ইরানের প্রসিকিউটর অফিসের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়েছিল বলে ইরনা জানিয়েছে।
গ্রেপ্তারের আগে গাজিয়ানি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘যাই ঘটুক না কেন, জেনে রাখুন যে বরাবরের মতো আমি ইরানের জনগণের পাশে থাকব। এটাই হয়তো আমার শেষ পোস্ট।’
অভিনেত্রীরা ইরানের বেশ কয়েকটি হাই প্রোফাইল ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম যারা দেশটির করণিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন।
এর আগে রবিবার, কাতার বিশ্বকাপে ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক এহসান হাজসাফি বলেছিলেন, ‘আমাদের মানতে হবে যে আমাদের দেশের পরিস্থিতি ঠিক নয় এবং আমাদের জনগণ খুশি নয়।’
পৃথকভাবে, ইরানের বক্সিং ফেডারেশনের প্রধান হোসেইন সোরি ঘোষণা করেছেন, তিনি তার দেশে বিক্ষোভের সহিংস দমনের কারণে স্পেনের একটি টুর্নামেন্ট থেকে দেশে ফিরবেন না।
মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে প্রায় ৪০০ বিক্ষোভকারী নিহত এবং প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
ইরানের নেতারা বলছেন, বিক্ষোভগুলি দেশের বিদেশী শত্রুদের দ্বারা সংগঠিত ‘দাঙ্গা’।
বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত পাঁচজন বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।