ভারত

ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোদির ছবিযুক্ত ‘সেলফি কর্নার’ করার নির্দেশ

এখন থেকে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়াদের সেলফি তুলতে যেতে হবে সেলফি কর্নারে। আর সেখানে সেলফি তোলা মাত্রই পেছনে উঁকি দেবেন রাষ্ট্রের হর্তাকর্তা শ্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন নির্দেশনাটা এমনই।
ভারতের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলেজের অধ্যক্ষেরা এমন নির্দেশনা পেয়েছেন।

ভারতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগের বছর এমন নির্দেশনা দেশটিতে বেশ বিতর্ক ছড়িয়েছে।

এই নির্দেশনায় মোদি সেলফি কর্নারে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট কারার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। সেলফি বুথে থ্রিডি ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। বিভিন্ন বিষয়সহ যেমন শিক্ষাখাতের আন্তর্জাতিকীকরণ, স্মার্ট ভারত হ্যাকাথন, উচ্চশিক্ষায় ভারতের অগ্রগতি মাথায় রেখে সেলফি কর্ণার বানাতে হবে।

সমালোচকেরা বলছেন, ঠিক নির্বাচনের আগে বিজেপি তাদের প্রচারের অনানুষ্ঠানিক মাধ্যম হিসেবে এই ব্যবস্থাই বেছে নিয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সেক্রেটারি মনীশ জোশী বলেছেন, এই সেলফি পয়েন্টগুলো শুধু গর্বের উৎস হিসেবেই কাজ করবে না, বরং প্রতিটি নাগরিককে রূপান্তরমূলক উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকিত করবে, যা বৈশ্বিক মঞ্চে ভারতেকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, ছাত্রদের এই বিশেষ মুহূর্তগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। যা ভারতীয়দের সম্মিলিত গর্ববোধ জাগিয়ে তুলবে।

জোশী আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মের শক্তি ও উদ্দীপনাকে কাজে লাগানোর অনন্য সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তাঁদের মনকে উদ্দীপ্ত করে তুলতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই সেলফি কর্নার তরুণদের মধ্যে জাতীয় গর্ব এবং সচেতনতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি গতিশীল এবং আকর্ষনীয় জায়গা হিসাবে আবির্ভূত হবে।

এমন স্থাপনা নির্মাণ করতে বলার কোনো আইনি বিধান নেই বলে জানিয়েছে সমালোচকেরা। তারা বলছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে যে, ভারতের সব অর্জনের পেছনে মাত্র একজন ব্যক্তির ভূমিকা।

জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষক বলেন, সেলফি কর্ণারগুলো বিতর্ক ছড়াবে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি বহুবিধ মতামত লালনের জায়গা। সেলফি কর্ণার যদি শুধু একজন ব্যক্তির মত প্রচারের জায়গা হয়, তাহলে তা দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার পরিপন্থী হবে।’

একজন ব্যবস্থাপনা শিক্ষক বলেন, ইউজিসি এই ধরনের নির্দেশনা জারি করলেও ক্যাম্পাস প্রশাসন তা উপেক্ষা করতে পারবে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের (শিক্ষা) এই ধরনের পরামর্শে কান দেওয়া উচিত নয়। যে সকল প্রাতিষ্ঠানিক নেতারা দালাল নন, তারা এই ধরণের পরামর্শ উপেক্ষা করতে সক্ষম।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension