ভারত

ভারতে ৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৪১ শ্রমিক, পাঁচ ধাপের অ্যাকশন প্ল্যান

ভারতের উত্তরাখণ্ডে টানেলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আটকা পড়ে আছেন ৪১ শ্রমিক। গতকাল রোববার তাঁদের উদ্ধার করার জন্য পাঁচ ধাপের অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব অনুরাগ জৈন বলেন, পাঁচটি বিভিন্ন সংস্থা এ পরিকল্পনাগুলো অনুসারে কাজ করবে। আটকা পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তিন দিক থেকে ড্রিল করা করা হবে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক জীবন মূল্যবান। তাঁদের বাঁচানোর জন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।’

একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে জানান সচিব।

অনুরাগ জৈন বলেন, ‘বৈঠকে পাঁচটি বিকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং পাঁচটি পৃথক সংস্থাকে এ বিকল্পগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। পাঁচটি সংস্থা হলো—ওয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন (ওএনজিসি), সাতলুজ জল বিদ্যুৎ নিগম (এসজেভিএনএল), রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল), ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (টিএইচডিসিএল)।’

জৈন বলেন, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও) এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্মাণ শাখাও এ উদ্ধার অভিযানে যুক্ত হয়েছে।

পাঁচটি বিকল্প হলো:
১. আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য টানেলের ওপর থেকে সাতলুজ জলবিদ্যুৎ নিগমের সহায়তায় উলম্বভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়া।

২. রেল বিকাশ নিগম এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের জন্য অন্য আরেকটি উলম্ব পাইপলাইন নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এর আগে একদিনের মধ্যেই সুড়ঙ্গপথ তৈরি করে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন।

৩. টানেলটির অন্য আরেক প্রান্তে ড্রিলিং শুরু করেছে গভীর সুড়ঙ্গ খোঁড়ায় দক্ষ ওয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন।

৪. নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পর প্রধান সিল্কিয়ারা প্রান্ত থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়বে ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যানোপি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে।

৫. তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড মাইক্রো টানেল তৈরি করা নিয়ে কাজ করবে। এর জন্য ভারী যন্ত্রপাতি আনানো হয়েছে।

আজ সোমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর সঙ্গে আলাপ করে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের মনোবল বজায় রাখা জরুরি।

সুড়ঙ্গের বাইরে অপেক্ষারত পরিবারগুলোর জন্য এটি খুব বেদনাদায়ক। শ্রমিকদের কণ্ঠস্বরও ক্রমে নিস্তেজ হয়ে এসেছে বলে জানায় তাঁদের পরিবার। শ্রমিকদের খাবার, পানি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

চিকিৎসকেরাও আটকে পড়া শ্রমিকদের জরুরি পুনর্বাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন। তাঁদের আশঙ্কা, দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকার কারণে শ্রমিকদের ওপর মানসিক ও শারীরিক প্রভাব পড়তে পারে।

উত্তরাখণ্ডে টানেলের এক অংশ ধসে পড়ার কারণে গত ১১ নভেম্বর থেকে সেখানে আটকা পড়ে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। কর্তৃপক্ষ বলছে, সব শ্রমিক নিরাপদে আছেন এবং তাঁদের স্টিলের পাইপ দিয়ে খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension