উত্তর আমেরিকাপ্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

মঙ্গলবার থেকে চালু ‘ট্রাম্প শুল্ক’, পাল্টা জবাব দেবে চীন-মেক্সিকো-কানাডা

পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে মোটা অংকের শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশমতে এ সপ্তাহেই চালু হতে যাচ্ছে এই শুল্ক।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

তবে আগের ঘোষণা মতে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ নয়, মঙ্গলবার থেকে চালু হবে এই শুল্ক।

কানাডা-মেক্সিকোর বিরুদ্ধে সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন ও চীনের বিরুদ্ধে মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ঠ উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন ট্রাম্প।

মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কানাডা থেকে আসা জ্বালানি ও এ সংক্রান্ত উপকরণে শুল্কের পরিমাণ ১০ শতাংশ ধরা হয়েছে।

অপরদিকে, চীনে থেকে আমদানি করা সব পণ্যে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প। ইতোমধ্যে ট্রাম্প তার প্রথম শাসনামলে চীনের পণ্যে বড় আকারে শুল্ক বসিয়েছিলেন, যা বাইডেন প্রশাসন অব্যাহত রেখেছিল। এই শুল্কের সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরও বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক।

তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় চীনের আমদানিতে ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছিলেন ট্রাম্প।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রসহ এই চার দেশেই জ্বালানি, অটোমোবাইল ও খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় আকারে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল ইমারজেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট নামের একটি আইনের আশ্রয় নিয়ে এই শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী ও মাদক, বিশেষত, প্রাণঘাতি ফেন্টানিল থেকে তৈরি হওয়া নজিরবিহীন হুমকি জাতীয় জরুরি অবস্থার সমতুল্য।’

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এই উদ্যোগের লক্ষ্য ওই তিন দেশকে ‘অবৈধ অভিবাসন বন্ধের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং বিষাক্ত ফেন্টানিল ও অন্যান্য মাদক যাতে আমাদের দেশে না ঢুকতে পারে, সে ব্যবস্থা করা।’

জবাব দেবে চীন-কানাডা-মেক্সিকো
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ নেবে। পাশাপাশি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাবে বেইজিং।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবম ঘোষণা দেন, তার দেশও আমেরিকার পণ্যে শুল্ক আরোপ করবে। মেক্সিকোর স্বার্থ রক্ষায় শুল্ক বসানো ও অন্যান্য সুরক্ষামূলক উদ্যোগ নিতে অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ক্লদিয়া।

অপরদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট কিছু মার্কিন পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসাবেন তিনি। ক্লদিয়া শেনবমের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও উল্লেখ করেন ট্রুডো।

এসব পণ্যের মোট মূল্যমান বছরে ১০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি, মঙ্গলবারেই এই শুল্ক আরোপ করবে ওন্টারিও।

পরবর্তীতে আরও তিন সপ্তাহ পর দ্বিতীয় দফায় আরও কিছু পণ্যে শুল্ক আরোপ করবেন বলে নিশ্চিত করেন কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না পরিস্থিতির আরও অবনতি হোক। কিন্তু কানাডা, কানাডার জনগণ ও তাদের চাকরির অধিকারের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’

এখানেই শেষ নয়
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছে, এখানেই থামছেন না তিনি। মার্কিন বাণিজ্যের স্বার্থে আরও পদক্ষেপ নেবেন আগামীতে।

এ সপ্তাহেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

পাশাপাশি, সেমিকন্ডাক্টর, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, তেল ও গ্যাস আমদানিতেও শুল্ক বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি।

হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষা দিতে ও আলোচনার টেবিলে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে শক্তিশালী ও উপযোগী উপকরণ হলো শুল্ক আরোপ করা।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension