মণিপুরে এবার রকেট হামলা, এক পুরোহিতের মৃত্যু
ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্সের’ মণিপুর রাজ্যে সশস্ত্র কুকি বিদ্রোহীদের রকেট হামলা চালিয়েছে। বিষ্ণুপুর জেলার মইরং ফিওয়াংবাম লেইকাই এলাকায় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মৈরেম্বাম কৈরেং সিংহের বাড়িতে এ হামলা হয়েছে। হামলায় একজন বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। মৈরেম্বাম কৈরেং সিং স্বাধীনতার পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি জেল খেটেছিলেন। পরে তিনি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আর রে রাবেই (৭০) নামে স্থানীয় এক বয়স্ক পুরোহিতের মৃত্যু হয়েছে। ওই বৃদ্ধ ঘটনার সময় প্রার্থনা করছিলেন।
আচমকা হামলায় তিনি নিহত হন। এ ছাড়া এ ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। দেশের মধ্যে এমন ক্ষেপণাস্ত্র হানার নজির আর নেই বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
আইএনএ অর্থাৎ ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি মিউজিয়ামের ১০০ মিটার দূরেই এই হামলা হয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ওয়ালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার লক্ষ্যই ছিল এই মিউজিয়াম। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ের দিক থেকে এই রকেট ধেয়ে আসে।
মইরংয়ের এই সামরিক জাদুঘরটি নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোসকে উৎসর্গ করে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল এই মইরংয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পতাকা ওড়ানো হয়েছিল।
এর আগে সকালে তেরাখংসানবি নামে আরো একটি গ্রামেও একই ভাবে রকেট হামলায় দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। মেইতেইরা দাবি করছে কুকিরাই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এদিকে পুলিশের দাবি, স্থানীয় ভাবে তৈরি হলেও উন্নত প্রযুক্তির ওই ক্ষেপণাস্ত্র ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আঘাত হানতে পারে।
কুকিরা মেইতেইদের বেশ কিছু ভিডিও পাঠিয়ে দাবি করেছে, আরাম্বাই টেঙ্গল বাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মেইতেই এলাকায় আছড়ে পড়ে ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উত্তেজনা বাড়ছে রাজ্যে।
এ ছাড়া পাহাড় থেকে বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর জেলায় গুলিও চালিয়েছে, যার জবাবও দেওয়া হয়েছে, বলছে মণিপুর পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ত্রংলাওবি এলাকার কুম্বি গ্রামে কয়েকটি ড্রোম হামলা চালিয়েছে কুকি বিদ্রোহীরা। তাতে দুজন নিহত ও ৯ জন আহত হওয়ার খবর আসে। রকেট ও ড্রোন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মণিপুরের সব স্কুল শনিবার বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
মণিপুরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষ নিয়ে সব নিরাপত্তা বাহিনী চিন্তায় পড়েছে। জাতিদাঙ্গায় বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে রাজ্য পুলিশ ছাড়াও আধা সেনা এবং সেনা মোতায়েন রয়েছে। মেইতেই বাহিনী ও পুলিশ কুকি এলাকা দখলে পুরোদমে অভিযান চালাচ্ছে। ফলে কুকিরা এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন।
সূত্র: আনন্দবাজার, দ্য ওয়াল