
মার্কিন অর্থনীতির জন্য সতর্কবার্তা
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘ নেতিবাচক’-এ পরিবর্তন করেছে মুডি’স। এটিকে দেশটির অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। একই সঙ্গে এটিকে খারাপ আর্থিক অবস্থা ও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য রাজনৈতিক সংকটের ইঙ্গিতবাহী হিসেবে দেখছেন তারা। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।
এ পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং গ্রেডের কিছুটা পতন হয়েছে। এটা দীর্ঘমেয়াদি উদ্বেগের বিষয়। এর জন্য দায়ী ক্রমবর্ধমান সুদের হার, ক্রমবর্ধমান ঋণের বোঝা ও বাজেট ঘাটতি কমাতে একমত হতে না পারা কংগ্রেস।
এর আগে ফিচ মার্কিন দীর্ঘমেয়াদি রেটিং ‘এএএ’ থেকে ‘এএ+’-এ নামিয়েছে। এ পতন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের ঘটনা।
যদিও মুডি’সের এ পদক্ষেপ ডাউনগ্রেড নয়। এর পরও এটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে রাজনৈতিক সংকটে ফেলতে পারে। তিনি আমেরিকার বাজেট ঘাটতিসহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রিপাবলিকানদের কাছে সমালোচিত হচ্ছেন। রিপাবলিকানরা সরকারি আয়-ব্যয়ের ব্যবধান দূর করতে বলছেন। এজন্য ব্যয় কমানোর চাপ দিচ্ছেন। বাইডেন অর্থনীতি সম্প্রসারণ, উচ্চ উপার্জনকারী ও করপোরেশন কর বাড়িয়ে ভবিষ্যতের ঘাটতি কমানোর প্রস্তাব করেছেন। কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা যদি ব্যয় পরিকল্পনায় একমত হতে না পারে, তবে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী সপ্তাহে শাটডাউনের মুখোমুখি হতে পারে।
মুডি’সের কর্মকর্তারা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক দুর্দশা লাঘবের তাৎক্ষণিক পথ দেখতে পাচ্ছেন না।
উচ্চ সুদহারের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ব্যয় কমাতে বা রাজস্ব বাড়াতে কার্যকর নীতিমালা ছাড়াই মুডি’সের কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য দুর্বল হবে। কংগ্রেসে রাজনৈতিক মেরুকরণ বাড়ায় এসব নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
মুডি’স এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে প্রবল ক্রেডিট শক্তি। দেশটি বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে ডলারের ভূমিকা কমাতে দেবে না।
ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট এল. ইয়েলেন সানফ্রান্সিসকোয় চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী হি লিফেংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বলেন, ‘চীনা কর্মকর্তাদের কাছে বাইডেন প্রশাসনের ঘাটতি-হ্রাস প্রচেষ্টার ব্যাখ্যা করেছি।’ চীন মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় ঋণদাতা।
ট্রেজারি ও হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা জানান, তারা মুডি’সের ক্রেডিট পরিবর্তনের সঙ্গে একমত নন। বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য তারা রিপাবলিকানদের দায়ী করেন।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ পিয়েরে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মুডি’সের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের চরমপন্থার আরেকটি পরিণতি।’
ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি ওয়ালি অ্যাডেইমো বলেন, ‘প্রশাসন টেকসই অর্থনীতি রক্ষার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। আমাদের ট্রেজারি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও সবচেয়ে বেশি সম্পদে ভরপুর।’