মার্কিন টিভি চ্যানেলের চাকরি ছাড়লেন মেহেদি হাসান
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এমএসএনবিসির ‘সান ডে শো’ অনুষ্ঠানে আর মেহেদি হাসানকে দেখা যাবে না। জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক ও তার্কিক মেহেদি হাসানকে গতকাল রোববার রাতে তিনি এ নেটওয়ার্ক ছেড়ে জীবনের নতুন চ্যালেঞ্জের খোঁজ করার কথা জানিয়ে এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট দেন।
সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি রোববার রাতে এমএসএনবিসি চ্যানেলে মেহেদি হাসানের ‘সান ডে শো’ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। তবে গত নভেম্বরে চ্যানেলটি তাঁর অনুষ্ঠান বাতিল দিয়ে নতুন করে। এ ঘোষণার পর প্রগতিশীল আইনপ্রণেতা ও অধিকারকর্মীরা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, ইসরায়েল নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্যের কারণেই তাঁকে নিয়ে আপত্তি জানায় কর্তৃপক্ষ।
চ্যানেলটিতে সম্প্রচারিত সর্বশেষ অনুষ্ঠানে মেহেদি হাসান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি এটা স্পষ্ট করতে চাই যে আমি অত্যন্ত গর্বিত। আমরা এ অনুষ্ঠানে, এ নেটওয়ার্কে যা অর্জন করেছি, তার জন্য আমি বেশ গর্বিত। আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য, সমর্থনের জন্য ও প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে নতুন বছর, নতুন পরিকল্পনা।’
সংবাদমাধ্যম পলিটিকোতে এক বিবৃতির মাধ্যমে হাসানের চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এমএসএনবিসি।
গত নভেম্বরে ই-মেইল বার্তায় চ্যানেলটির প্রেসিডেন্ট রাশিদা জোনস কর্মীদের চ্যানেলের শোগুলোর পুনর্বিন্যাস সম্পর্কে বলেন। বার্তায় তিনি সকালে নতুন অনুষ্ঠান চালু করার কথাও বলেন। তবে তিনি মেহেদি হাসানের অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার কোনো কারণ উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মেহেদি হাসান বিকল্প উপস্থাপক এবং ধারাভাষ্যকার হিসেবে থাকবেন।
কংগ্রেস সদস্য রোহিত খান্না গত নভেম্বরে এক্স প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে বলেন, হাসানের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া এমএসএনবিসির খারাপ পদক্ষেপ। তা-ও এমন এক সময়ে, যখন তিনি গাজায় চলমান যুদ্ধে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছেন।
২০২০ সালের অক্টোবরে মেহেদি হাসান স্ট্রিমিং পরিষেবা পিককে তাঁর অনুষ্ঠান শুরু করেন। ২০২১ সালের মার্চে অনুষ্ঠানটি এমএসএনবিসিতে নিয়ে আসা হয়। এর আগে তিনি আল জাজিরা ইংলিশের জন্য কাজ করতেন এবং দ্য ইন্টারসেপ্টের একটি পডকাস্ট উপস্থাপন করতেন।
গত রোববার হাসান এমএসএনবিসিতে তাঁর সময়কে একটি সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
হাসান বলেন, ‘তিন বছর ধরে এমএসএনবিসিতে এই সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া এবং অসাধারণ সব প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করা দারুণ এক অভিজ্ঞতা ছিল।’
এর আগে গত অক্টোবরে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে এমএসএনবিসি গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণে তিন মুসলিম উপস্থাপককে অপসারণ করার কথা উল্লেখ করে।
মেহেদি হাসান বরাবর অতিথিদের কঠিন সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য বেশ পরিচিত। তাঁর সাক্ষাৎকারগুলোর চুম্বক অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়।