
মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে কৃষ্ণসাগরের আকাশে একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন। তবে ওয়াশিংটনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়া বলেছে, কোনো সংঘর্ষে নয়; বরং দ্রুত বাঁক নিতে গিয়ে মার্কিন ড্রোনটি সাগরে ভেঙে পড়েছে।
মার্কিন বিমান বাহিনী বলেছে, মঙ্গলবার সকালে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এমকিউ-৯ রিপার নামের ওই ড্রোনটি নজরদারির কাজে নিয়োজিত ছিল। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকেই অত্র অঞলে গোয়েন্দা ড্রোন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে নিজেদের ভাষায় বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তার পর এই প্রথম আমেরিকা ও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে এ রকম সংঘাতের ঘটনা ঘটল। রুশ যুদ্ধবিমানের এই কর্মকাণ্ডকে বেপরোয়া ও অপেশাদার হিসেবে উল্লেখ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগরের উপর দিয়ে উড়ছিল রাশিয়ার দুটি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান এবং একটি মার্কিন রিপার ড্রোন। এ সময় একটি রুশ যুদ্ধবিমান ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনটির সামনে যায় এবং সেটির ওপর কয়েকবার জ্বালানি তেল ফেলে। এর পর যুদ্ধবিমানটি ড্রোনটির প্রোপেলারে আঘাত করলে ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়।
অপর এক বিবৃতিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল জেমস বি হেকার দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিয়মিত অভিযানে ছিল আমাদের এমকিউ-৯ বিমানটি। কিন্তু রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমান সেটিকে আঘাত করে। এর ফলে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়ার এই অনিরাপদ ও অপেশাদার পদক্ষেপের ফলে দুটি উড়োজাহাজ প্রায় বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছিল।
তবে মার্কিন বাহিনীর এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, এ ঘটনায় রুশ যুদ্ধবিমান কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেনি কিংবা ড্রোনটির সংস্পর্শেও আসেনি।
মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অ্যারোস্পেস ফোর্সেসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে কৃষ্ণসাগরের আকাশে মঙ্গলবার সকালে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ ড্রোন শনাক্ত করে। সেটি রুশ ফেডারেশনের সীমান্তেরু এগোচ্ছিল। তাছাড়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য যে অস্থায়ী আকাশপথ তৈরি করা হয়েছে, সেটিও লঙ্ঘন করছিল ড্রোনটি। এর পরই অনুপ্রবেশকারী ড্রোনটিকে চিহ্নিত করার জন্য জঙ্গিবিমান পাঠানো হয়। কিন্তু ড্রোনটি দ্রুত বাঁক বদল করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এমকিউ-৯ ড্রোনটি এবং সেটি সাগরে গিয়ে পড়ে।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।