মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকীতে ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা
নৈতিক পুলিশের হেফাজতে যুবতী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ইরানের ২৯ জন ব্যক্তি ও এনটিটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বিশদ একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে ১৫ই সেপ্টেম্বর। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলাদা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এতে তিনি বলেছেন, এটা হলো ইরানে প্রতিবাদ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নৃশংস দমনপীড়নের প্রতিবাদে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ১৩তম নিষেধাজ্ঞা।
যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আছেন ২৫ জন ব্যক্তিবিশেষ, ইরানের রাষ্ট্র সমর্থিত তিনটি মিডিয়া আউটলেট, ইরানে ইন্টারনেট গবেষণা বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) ২৯ জন ব্যক্তিবিশেষ ও এনটিটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর মধ্যে আছে ইরানে ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) ১৮ জন সদস্য, ইরানের প্রিজনস অর্গানাইজেশনের প্রধান, তিনজন ব্যক্তিবিশেষ, শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত একটি কোম্পানি। তারা শাসকগোষ্ঠীর পর্র্যায়ক্রমিক সেন্সরশিপ এবং ইন্টারনেট ব্লক করার সঙ্গে যুক্ত।
এ ছাড়া আছে আইআরজিসির তিনটি এবং শাসকগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত তিনটি মিডিয়া আউটলেট- ফার্স নিউজ, তাসনিম নিউজ এবং প্রেস টিভি এবং তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তা। ট্রেজারি ফর টেরোরিজম অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন বলেছেন, মাহসা আমিনির নির্মম মৃত্যুর পর আমরা একটি বছর পাড় করতে চলেছি। আমিনিকে তথাকথিত নৈতিকতা পুুলিশের হেফাজতে অকারণে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।
ইরানজুড়ে নারী পুরুষ, সব ধর্ম-জাতির অংশগ্রহণে যে আন্দোলন হয়েছে তা স্মরণ করছি আমরা। এসব প্রতিবাদকে কর্তৃপক্ষ মোকাবিলা করেছে ভয়াবহ সহিংসতা, গণহারে জেলবন্দি করে এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে।
এতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বিক্ষোভ ইরানের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী মোকাবিলা করেছে ভয়াবহ সহিংসতার মাধ্যমে। কমপক্ষে ৫০০ মানুষকে হত্যা করেছে এবং আহত করেছে অনেককে। এতে সরাসরি জড়িত ইরানের পুলিশ বাহিনীর সোশ্যাল ডেপুটি ও মুখপাত্র সাঈদ মোনতাজেরোল মেহেদি। নারীদের বিরুদ্ধে হিজাব আইন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে এলইএফ নামে পরিচিত তেহরান পুলিশের বিশেষ ইউনিটের কমান্ডার হোসেইন আমজাদিয়ানের বিরুদ্ধে। একই সংস্থার তেহরান প্রদেশের কমান্ডার আব্বাস আলি মোহাম্মাদিয়ান, মাজানদারা প্রদেশের কমান্ডার হাসান শাহরেস্তানি, সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের আহমেদ তাহেরি, সিন্তান বেলুচিস্তান প্রদেশের ডেপুটি কমান্ডার আহমেদ নাদেরিয়ান, গিলান প্রদেশের কমান্ডার সৈয়দ খলিল সাফাভি, পূর্ব তেহরান প্রদেশের কমান্ডার দেলাওয়ার আলঘাসি মেহর প্রমুখের নামে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।