প্রবাস

মিয়ামিতে কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

মিয়ামিতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজন, সরকারি কর্মকর্তা, কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সদস্য ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বড় একটি অংশ অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাজানো হয় বাংলাদেশের এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের বাদ্যযন্ত্র সংগীত। এরপর উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কনসাল জেনারেল সেহেলি সাবরিন।

বক্তব্যে তিনি অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং উপস্থিত থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র-যুবা আন্দোলনের শহিদদেরও স্মরণ করেন।

তিনি বাংলাদেশের গত ৫৪ বছরে চমকপ্রদ অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশ আজ নিজস্ব উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।

কনসাল জেনারেল বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার,প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল অঙ্গীকারের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্বের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কনসাল জেনারেল প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকারও প্রশংসা করেন। বক্তব্যের শেষাংশে তিনি অনুষ্ঠানটি সফল ও স্মরণীয় করে তোলার জন্য সকল অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে মিয়ামি-ডেড কাউন্টির মাননীয় মেয়রের প্রতিনিধি হিসেবে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের সহকারী পরিচালক মিস মারিয়া ড্রাইফুস-উলভার্ট প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধুত্বের সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন মিশন অফিসের প্রতিনিধি, মিয়ামিতে অবস্থানরত বিভিন্ন বিদেশি কনস্যুলেটের সদস্য, মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রটোকল বিভাগের কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যমকর্মী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ কর্নার’ স্থাপন করা হয়, যেখানে পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্য, টেক্সটাইল ও হস্তশিল্প সামগ্রী, মসলাজাত খাদ্যপণ্য, বিশ্বখ্যাত জামদানি ও মসলিন শাড়ি, রেশম, কাঁথার কাজ, তাঁতের পণ্য, মণিপুরি পণ্য, প্রাকৃতিক রংয়ের পণ্য, ওষুধ, রিকশা পেইন্টের শিল্পকর্ম, সিরামিকসহ নানাবিধ ঐতিহ্যবাহী পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও দক্ষতার পরিচয় তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইতিহাস ও অর্জন নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা উপস্থিত সবাইকে আবেগাপ্লুত করে। পরে একটি কেক কাটার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension