মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তারা বলছে, প্রতিবেশী ভারতের চেয়ে ৩-৪ গুণ বেশি খরচ করা হয়েছে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এ অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। গত ১৯ জুলাই হঠাৎ করে মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। জনগণ জানতে চায় এই প্রকল্প থেকে কত টাকা লুটপাট হয়েছে। সরকার হিসাব না দিলেও একদিন এর হিসাব এবং লুটপাটের বিচার হবে।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘২০১৩ সালে ৬৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে দেশে ২০টি ডেমো ট্রেন এনে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেছিল এই সরকার। যা কিছুদিনের মধ্যে ভাঙারিতে পরিণত হয়।’
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই তাড়াহুড়ো করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এ নিয়ে জনমনে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। গত ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা এই বিনা ভোটের সরকার বুঝতে পারছে তাদের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। গুম, খুন, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, কণ্ঠরোধ করে ক্ষমতায় থাকার দিন ফুরিয়ে গেছে।’
‘মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেখ হাসিনা সেই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ভরসা পাচ্ছেন না। এ কারণে উন্নয়ন দেখাতে কাজ অসমাপ্ত রেখেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তাড়াহুড়ো করে মেট্রোরেলের একাংশ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেছেন তিনি।’
সরকারের দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের কারণে প্রতিবেশী দেশের তুলনায় এ দেশের মেট্রোরেলে বেশি ব্যয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের ভাড়াও অনেক বেশি ধরা হয়েছে। কলকাতার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে এখানে। সরকারকে এই লুটপাট ও দুর্নীতির জবাব একদিন দিতে হবে।’
বর্তমান সরকারকে প্রতিহিংসাপরায়ণ আখ্যা দিয়ে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘২০০৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আমলেই বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঢাকায় স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান (এসটিপি) তৈরি করে মেট্রোরেলের নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে তা মুছে ফেলার চেষ্টা করে এই সরকার। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ওয়েবসাইটে এই মেট্রোরেলের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে সবকিছু বিস্তারিত রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহসম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।