অর্থনীতিপ্রধান খবরযুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে আরেক ব্যাংক বন্ধ, এ বছরেই ৪ ব্যাংকে ধস

যুক্তরাষ্ট্রে হার্টল্যান্ড ট্রাই-স্টেট ব্যাংক অব এলখার্ট, কানসাসে ধস পড়েছে। যথারীতি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)।

এফডিআইসি হার্টল্যান্ড ব্যাংকের সব আমানতের দায়িত্ব গ্রহণ করে গ্রাহকদের সুরক্ষা দিতে সম্মত হয়েছে; সেই সঙ্গে তারা ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংক অব সিরাকিউজের সঙ্গেও চুক্তি করেছে। অর্থাৎ, হার্টল্যান্ড ব্যাংককে কিনে নেবে এই ফার্স্ট ব্যাংক।

যথারীতি সপ্তাহের শেষ দিনে এই ব্যাংক ধসে পড়ল বা এফডিআইসি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিল। অর্থাৎ আগামী সোমবার এই হার্টল্যান্ড ব্যাংকের চারটি শাখা ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংকের শাখা হিসেবে খুলবে।

চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এভাবে ব্যাংক ধসে পড়তে শুরু করে। একে একে ধসে পড়ে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক, সিগনেচার ব্যাংক ও ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা নড়েচড়ে বসেছেন; গ্রাহকদের সুরক্ষা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়াস পান তারা।

গত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে আগের তিনটি ব্যাংক ধসে পড়ে। শেষ ব্যাংক হিসেবে মে মাসে ধসে পড়ে ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ধসের ঘটনা।

এফডিআইসি বলেছে, হার্টল্যান্ড ব্যাংকের গ্রাহকেরা সোমবার থেকে চেক বই বা এটিএম কার্ডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতে পারবেন। তাদের কিছুই করতে হবে না, কারণ, তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংকের গ্রাহক হয়ে যাবেন।

এফডিআইসি বলেছে, হার্টল্যান্ড ট্রাই-স্টেট ব্যাংকের মোট সম্পদ ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, আমানত আছে ১৩ কোটি ডলারের। এসবের দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংক হার্টল্যান্ড ট্রাই-স্টেট ব্যাংকের সব ব্যর্থ সম্পদেরও দায় নেবে।

এদিকে এফডিআইসি বলেছে, ঋণগ্রহীতাদের গায়েও তেমন একটা আঁচড় লাগবে না—এফডিআইসি ও ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংক ক্ষতি ভাগাভাগি এবং সম্ভাব্য ঋণ পুনরুদ্ধারে শিগগির চুক্তি করবে।

এফডিআইসি ড্রিম ফার্স্ট ব্যাংকের উদ্দেশে বলেছে, ‘আপনাদের উচিত হবে গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধ করে যাওয়া; এস্ক্রো হিসাবের অর্থসহ, ঋণের শর্ত পরিবর্তিত হবে না।’

হার্টল্যান্ড ব্যাংকের ধসে যাওয়া সম্পর্কে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও আগের তিনটি ব্যাংক ধসের কারণ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যম মানের ব্যাংকগুলোর সংকটের মুখে পড়ার কথা বলা হয়।

এই মধ্যম মানের ব্যাংকগুলোর গ্রাহকভিত্তি জেপি মর্গানের মতো মহিরুহ ব্যাংকগুলোর মতো অতটা বৈচিত্র্যপূর্ণ নয়। যেমন এসভিবি ব্যাংকের গ্রাহক ছিল মূলত স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো। সিগনেচার ব্যাংক ঋণ দিত মূলত আবাসন খাতে। সেই সঙ্গে তারা সম্প্রতি ক্রিপ্টোকারেন্সির গ্রাহকদের টানতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল। নির্দিষ্ট খাতভিত্তিক ঋণদানের কারণে এসব ব্যাংক বিপাকে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please, Deactivate The Adblock Extension