রুশ জ্বালানি কিনতে বাধা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন হামলার পর রাশিয়ার ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে রুশ জ্বালানিসহ (গ্যাস ও তেল) নানা পণ্যের রপ্তানি-আমদানি কমেছে। কিন্তু একই সময়ে রেকর্ড রুশ জ্বালানি আমদানি করেছে ভারত ও চীন।
বিশাল মূল্যছাড় সত্ত্বেও চীন ও ভারতকে অনুসরণ করে দুর্বল দেশগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রুশ তেল কিনতে সাহস পায়নি। কিন্তু যুদ্ধের অনেক সমীকরণ সম্প্রতি বদলাতে শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় কোনো দেশ রুশ জ্বালানি কিনলে যুক্তরাষ্ট্র বাধা দেবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সংকটে থাকা যেসব দেশ রুশ জ্বালানি কিনতে উদগ্রীব পাকিস্তান তাদের অন্যতম। এক মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর যেসব দেশ রুশ জ্বালানি আমদানি করছে, যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু তাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। কোনো দেশ রুশ জ্বালানি আমদানি করবে কিন, সেটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
ইউক্রেনে হামলার অভিযোগে যুদ্ধের শুরুর দিকেই দ্য সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন বা আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা (সুইট) থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু যুদ্ধের নয় মাসের মাথায় রাশিয়া নিয়ে অনেক ইস্যুর মতো লেনদেনেও নমনীয় হয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। জেপিমর্গান ও সিটিগ্রুপের মতো বিখ্যাত মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন করতে গোপনে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (৭ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শ্রেণির কিছু ব্যাংকে রুশ ব্যাংক বা অর্থ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন করার জন্য গোপনে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ও পররাষ্ট্র বিভাগ।
মূল্য যত দিন পর্যন্ত নিজেদের অনুকূলে থাকবে, তত দিন রুশ জ্বালানি তেল (ও গ্যাস) আমদানি অব্যাহত রাখবে ভারত। মস্কোয় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।
যুদ্ধ শুরুর পর বর্তমানে দ্বিতীয় শীর্ষ রুশ জ্বালানি তেল আমদানিকার দেশে পরিণত হয়েছে ভারত, প্রথম চীন। অথচ যুদ্ধের আগে ভারতে শীর্ষ জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক ছিল যথাক্রমে সৌদি আরব ও ইরাক।